রাজনীতি ৯ নভেম্বর, ২০২০ ০৩:৪৮

রাম-বামদের উসকানি সহ্য করবো না: বাবুনগরী

ডেস্ক রিপোর্ট

শনিবার চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে উগ্র কর্মীদের হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, চরমোনাই, আলেম-উলামা ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক সন্ত্রাসী স্লোগানের কড়া সমালোচনা করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজত মহাসচিব, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

গতকাল রবিবার (৮ নভেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, হেফাজতে ইসলাম দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ঈমান-আকিদা ভিত্তিক সংগঠন। লক্ষ কোটি মুমিন মুসলমানের প্রাণের সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। হেফাজতকে নিয়ে উসকানিমূলক সন্ত্রাসী স্লোগান দিয়ে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। হেফাজতকে নিয়ে কোনো রাম বামদের উসকানি আর আস্ফালন সহ্য করা হবে না।

হেফাজত মহাসচিব আল্লামা বাবুনগরী বলেন, পৃথিবীর বুকে ইসলাম একমাত্র শান্তির ধর্ম। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য শান্তির বার্তাবাহক হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। হাদীস শরীফে রাসুল (সা.) সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিধান বর্ণনা করেছেন। সংখ্যালঘুদের জান, মাল ও ইজ্জত- আব্রু রক্ষার আদেশ দিয়েছেন। কেবলমাত্র শান্তির ধর্ম ইসলামই সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত রয়েছে। মুসলমানরা কখনো হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করেনি। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, জাগো হিন্দু পরিষদ এসব উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে আধিপত্যবাদি শক্তির ছত্রছায়ায় হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

হেফাজত মহাসচিব আরো বলেন, ক'দিন আগে শাহবাগে বাম সংগঠনসমূহের অনুষ্ঠিত একটি সমাবেশ শেষে ‘প্রগতিশীল গণসংগঠনসমূহ’ ব্যানারে উদীচী, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়নসহ কিছু সংগঠনের নেতাকর্মীদের একটি মশাল মিছিল শহীদ মিনারে যাওয়ার পথে ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ'-এর বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে বিদ্বেষ ও উসকানিমূলক স্লোগান দিয়েছিল। ওরা মূলত এসব উসকানিমূলক স্লোগানের মাধ্যমে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে চায়। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে চায়। ওরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশবিরোধী আধিপত্যবাদী শক্তির হাতে আগ্রাসনের অজুহাত তুলে দিতে চায়। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের কর্তব্য, এসব উগ্রপন্থী সংগঠনের বিরুদ্ধে যথাযথ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, হেফাজতে ইসলাম বৃহত্তর অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন। ইসলাম, মুসলমান, দেশ ও জাতীর কল্যাণে সংগঠনটি শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করে যাচ্ছে। হেফাজতকে নিয়ে বাম রামদের আস্ফালনের আড়ালে ইসলাম ও দেশবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র নিহীত বলে মনে করি। কোনো আধিপত্যবাদী শক্তির হয়ে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র দেশবাসী সফল হতে দেবে না। অনতিবিলম্বে এদের আস্ফালন বন্ধ করা না হলে তৌহিদি জনতা ঈমান, ইসলাম ও দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্বাধীনতা রক্ষায় ষড়যন্ত্রকারীদেরকে সমূচি জবাব দিতে বাধ্য হবে।

হেফাজত মহাসচিব বলেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশের জন্য চরম হুমকি। এই সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ভুল তথ্য প্রকাশ এবং বানোয়াট ও ডাহা মিথ্যা অভিযোগ করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছিল। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী এ উগ্র সংগঠন আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছে। দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। সরকারকে এদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।