নিজস্ব প্রতিবেদক
তক্ষক কিনতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসে এক বছর আগে নিখোঁজ হন এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন (৩৭)। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুরের জঙ্গলের প্রায় ৫০ ফুট গভীর একটি গর্ত থেকে তার কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
হেলাল উদ্দিন রাজধানীর মুগদা থানার মদিনাবাগ এলাকার বাসিন্দা। তিনি সেতুবন্ধন নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মদিনাবাগ শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর তক্ষক কেনার জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ভুজপুরে এসে নিখোঁজ হন হেলাল। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর হেলালের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা পিংকি ভুজপুর থানায় মামলা করেন। কিন্তু তদন্তে কিছুই করতে পারেনি থানা-পুলিশ। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে পিবিআইকে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হোসেন বলেন, মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে চলতি বছরের ২৩ জুলাই রামগড় বাগানবাজার এলাকার যাত্রী বহনকারী মোটরসাইকেল চালক জাকির হোসেন রুবেলকে (২৪) গ্রেফতার করে পিবিআই। ২৫ জুলাই চট্টগ্রামের একটি আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
জবানবন্দিতে রুবেল জানান, গত বছরের ২৩ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে বাগানবাজার ইউনিয়নের লালমাই গ্রামের জনৈক ‘রাজা ভাই’তাকে বলেন, পার্শ্ববর্তী চিকনছড়া বাজারে হেলাল নামে এক লোক এসেছেন, তাকে যেন মোটরসাইকেলে করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়। রুবেল যখন হেলালকে নিয়ে রাজা ভাইয়ের বাড়িতে যান, সেখানে ইসমাইল, সাদ্দাম ও বিল্লালকে দেখেন। এরপর তিনি তাকে সেখানে রেখে চলে আসেন। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তক্ষকের ক্রেতা সেজে ফাঁদে ফেলে পিবিআই টিম গত বুধবার বিল্লালকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল জানান, হেলালকে হত্যা করে লাশ খাগড়াছড়ির কাছে ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুর এলাকার পাহাড়ে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। তক্ষকের দামে বনিবনা না হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয় বলে জানান বিল্লাল।
এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পিবিআই সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গর্ত থেকে মাটি সরিয়ে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে হেলালের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।