উন্নয়ন সংবাদ ২১ নভেম্বর, ২০২০ ০৫:৪৯

টমেটো চাষে স্বপ্ন দেখছে বগুড়ার চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা প্রতিকূলতার মাঝেও আগাম টমেটো চাষ করে লাভের আশা দেখছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার টমেটো চাষিরা। বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকেরা নানা প্রতিকূলতা ও ঝুঁকি নিয়ে আগাম টমেটো চাষ করে থাকেন।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে ধুনট উপজেলার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে আগাম টমেটোর চাষ করা হয়েছে। আরও প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ করতে জমি প্রস্তুত করছে টমেটো চাষিরা।

ধুনট উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহিনুর আলম জানান, ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী, চিকাশী, এলাঙ্গী সহ পায় ১০টি ইউনিয়নেই কমবেশি টমেটো চাষ হয়ে থাকে। টমেটো দীর্ঘমেয়াদী একটি ফসল। বীজ বোনা থেকে শুরু করে গাছের প্রথম ফল পাকা পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে এবং ফল ধারণ জাত ভেদে ৩০-৬০ দিন স্থায়ী হয়।

এ জন্য রবি মৌসুমের অনুকূল আবহাওয়ার সম্পূর্ণ সুযোগ নিতে হলে মৌসুম আসার আগেই চাষের আয়োজন করতে হয়। বর্ষাকালের চাষের জন্য এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত এবং আগাম জাতের ক্ষেত্রে জুলাই থেকে আগস্ট মাস এবং শীতকালীন চাষের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চারা উৎপাদনের জন্য বীজ তলায় বীজ বপন করতে হয়। চারা তৈরির দুই মাস আগে বীজ বপনের জন্য বীজতলা তৈরির প্রস্তুতি নিতে হয়। বীজতলায় নির্দিষ্ট পরিমাণ জৈব সার ও অন্যান্য সার প্রয়োগ করতে হয়।

ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন শেখ জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে আগাম টমেটো চাষ করেছেন। তার টমেটোর গাছে ফুলে ফুলে ভরে গেছে।

তিনি আরও জানান, শীতকালে আগাম টমেটো চাষ করতে বেশি ঝুঁকি থাকে। তারপরও বেশি লাভের আশায় ঝুঁকি নিয়ে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও টমেটো চাষ করেছি। প্রতিটি গাছেই ফুল ধরেছে। ভাল ফলন পেতে নিয়মিত পরিচর্যা, কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই দমনে নিয়ম মেনে কীটনাশক প্রয়োগ করছি। আশা করছি চলতি মৌসুমে ফলনও ভাল পাওয়া যাবে। তবে সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পেলে উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব হবে মনে করেন এই টমেটো চাষি।

পারধুনট গ্রামের আরেক টমেটো চাষি মিন্টু মিয়া বলেন, এক বিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকা খরচ করে টমেটো চাষ করেছি। প্রায় প্রতিটি গাছেই ফুল ধরেছে। ফলন আসা পর্যন্ত আরও প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার খরচ হতে পারে। বাজারে দাম ভাল পেলে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছি।

ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিদুল হক জানান, টমেটো চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। সরকারিভাবে এই উপজেলার ২০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের জন্য ১ হাজার ৫০০ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হবে।