ডেস্ক রিপোর্ট ।।
৪৮ ঘন্টা আগে যার হার্টে অস্ত্রোপচার হয়েছে সেই ১২ বছরের কিশোরী নূপুর আক্তার নিজেই আইসক্রিম খেলো এবং খাইয়ে দিলো তার চিকিৎসকদের। ওপেন হার্ট সার্জারি করার পর এমন দৃশ্য দেখা যায় বিরল। কিন্তু এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে হৃদরোগ হাসপাতালে।
গত রবিবার ( ২৫ আগস্ট) পাবনার সুজানগরের মীজানুর রহমানের মেয়ে নূপুর আক্তারের ওপেন হার্ট সার্জারি হয়। কিন্তু সেটা দেশের চলমান প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হয়নি। দেশের ইতিহাসে সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো করা এমআইসিএস ( মিনিমালি ইনভাসিব কার্ডিয়াক সার্জারি) পদ্ধতিতে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।
এ পদ্ধতিতে পুরো বুক ফাঁক না করে, পাঁজরের হাড় না কেটে মাত্র দুই ইঞ্চি ছিদ্র করা হয়। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে হওয়া এই এমআইসিএস’র নেতৃত্ব দেন সহকারী অধ্যাপক ও আবাসিক সার্জন ডা. আশ্রাফুল হক সিয়াম।
এ সাফল্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো টিমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আর গতকাল ( ২৭ আগস্ট) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক হাসপাতালে নূপুরকে দেখতে যান, তার সঙ্গে কথা বলেন।
আজ বুধবার ( ২৮ আগস্ট) নূপুর আক্তারকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে জানিয়ে ডা. আশ্রাফুল হক সিয়াম বলেন, ‘দুপুরের দিকে সে (নূপুর) আইসক্রিম খেতে চাইলো হঠাৎ করেই। তারপর আমি তাকে আইসক্রিম কিনে দিলাম। আর কেবল নূপুর নয়, ওর সৌজন্যে আজ আইসিইউতে থাকা সবাই একরকম উৎসব করে আইসক্রিম খেয়েছেন।
ডা. সিয়াম বলেন, নূপুরকে ছাড়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আজকেই ছিল। কিন্তু ওর পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলো আর একটা দিন রাখার জন্য। সে হিসেবে আগামীকাল তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
ওপেন হার্ট সার্জারির পর মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় রোগী বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত—এটাই এমআইসিএস’র সফলতা, যদিও নূপুর যাচ্ছে ৭২ ঘণ্টা পরে। তবে এতদিন পর্যন্ত অন্য পদ্ধতিতে হার্টের অস্ত্রোপচারের পর রোগীকে অন্তত ৮ থেকে ১০ দিন পর্যবেক্ষণে থাকতে হতো চিকিৎসকদের।