শিক্ষা ৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ১০:১১

এশিয়ার সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় যেগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট

কিউএস ইউনিভার্সিটি প্রতিবছর কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে উচ্চশিক্ষার জন্য পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে । ২০২১ সালের তালিকায় এশিয়ার ৬৩৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেরাদের সেরা হয়েছে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। পরপর তিন বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে থাকল।

সেরা ১০–এর তালিকায় সিঙ্গাপুরের আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। দেশটির নানইয়াং টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় (এনটিইউ) আছে সেরা তিনে।

এবারে চীনের ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ই সেরা ১০–এ জায়গা করে নিয়েছে। এশিয়ার সেরা উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানের তালিকার সেরা ৫০০-এর মধ্য চীনের ১২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এ ছাড়া ভারতের ১০৬টি, জাপানের ৯৮টি ও দক্ষিণ কোরিয়ার ৮৫টি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় আছে।

এবার সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্য—

১০. সাংহাই জিও টং ইউনিভার্সিটি, চীন
এবার ১০ হলে বিশ্ববিদ্যালয়টি গত বছর ছিল সেরা ৭–এ। ১৮৯৬ সালের যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টি চীনের অন্যতম পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। ১৬ হাজার ২২০ শিক্ষার্থী স্নাতক (আন্ডারগ্রাজুয়েট) পড়েন। আর পোস্ট গ্রাজুয়েটে ২১ হাজার ৯৬৮ শিক্ষা পড়াশোনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

৯. ইউনিভার্সিটি মালায়া, মালয়েশিয়া
ইউনিভার্সিটি মালায়া মালয়েশিয়ার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেটি সেরা ১০–এ জায়গা করে নিয়েছে। ৯ নম্বরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টি গত বছর যৌথভাবে ছিল ১৩তম। ইউনিভার্সিটি মালায়ার চার ধাপ উন্নয়নের কারণ হলো আন্তর্জাতিকভাবে গবেষণা কাজের স্বীকৃতি। শুধু গবেষণা খাতে এই বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ায় শীর্ষে। দেশটির রাজধানীতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২৪ হাজার ৭৭০ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে পড়ছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫ শতাংশ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী।

৮. দ্য হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, হংকং
হংকংয়ের দ্য হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এইচকেকিউএসটি) প্রধান চারটি বিভাগ হলো দ্যা স্কুল অব সায়েন্স, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশাল সায়েন্স। এগুলোর পড়াশোনার মান বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশ্বে পরিচিত করিয়েছে।

৭. পিকিং ইউনিভার্সিটি, চীন
এবার পিকিং ইউনিভার্সিটির র‍্যাঙ্কিংয়ে অবনমন হয়েছে। দুই ধাপ নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এখন সাত। রাজধানী বেইজিংয়ের এই উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি একাডেমিক ও কর্মীদের কারণে এশিয়ার শীর্ষে। ১৮৯৮ সালে যাত্রা শুরু হয়। তবে যাত্রার শুরুতে নাম ছিল ইমপেরিয়াল কলেজ। পড়ালেখার পাশাপাশি ক্যাম্পাস ও ঐতিহ্যবাহী চীনা স্থাপত্যরও জন্য পরিচিত পিকিং ইউনিভার্সিটি।

৬. ফুদান ইউনিভার্সিটি, চীন
এক ধাপ এগিয়ে ছয়ে এবার চীনের ফুদান ইউনিভার্সিটি। সাংহাইয়ের অন্যতম এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়ারা বিশ্বে বিভিন্ন সংস্থা ও করপোরেশনে কাজ করছেন। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের পরিচালকও হয়েছেন।

৫. ঝিজিয়াং ইউনিভার্সিটি, চীন
সেরা পাঁচে থাকা চীনের ঝিজিয়াং ইউনিভার্সিটি ১৮৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে। বিশ্বের ১৮০টি ইনস্টিটিউট ও ৩০টি দেশের সঙ্গে পার্টনারশিপ আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। পিএইচডিধারীর সংখ্যা এবং আন্তর্জাতিক ফ্যাকাল্টির জন্য পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়টি।

৪. ইউনিভার্সিটি অব হংকং (এইচকেইউ), হংকং
হংকংয়ের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব হংকং (এইচকেইউ)। গত বছরের এশিয়ার তৃতীয় থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টি এবার এক ধাপ নেমে গেছে। ফ্যাকাল্টি ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য সুনাম আছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। একাডেমিক মান ও গবেষকদের কারণে ইউনিভার্সিটি অব হংকং শুধু এশিয়ার সেরা নয়, বিশ্বেরও সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিউএসের করা বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ের তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়টি আছে ২২তম স্থানে।

৩. নানইয়াং টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়
নানইয়াং টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সিঙ্গাপুরের ২টি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ১০–এ আছে। গবেষণাকর্মের জন্য প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়টি। নানইয়াং টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়টি ডিজিটাল টেকনোলজি এ স্মার্ট ক্যাম্পাসের জন্য সুপরিচিত। আলী বাবা, রোলস রয়েস, ভলভো, ডেল্টা ইলেকট্রনিকস ও সিংটেলের মতো কোম্পানির সঙ্গে পার্টনারশিপ আছে নানইয়াং টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের।

২. সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়, চীন
চীনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি একাডেমিক কারণে সুপরিচিত। ২০টি স্কুল ও ৫৭টি বিভাগের এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্টস এবং লিটারেটার, সোশ্যাল সায়েন্স ও মেডিসিনের জন্য বিশ্বের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসেন।

১. সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর
এশিয়ার সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের করা র‍্যাঙ্কিংয়েও আছে। বিশ্বের সেরাদের তালিকায় সিঙ্গাপুরের এই বিশ্ববিদ্যালয় আছে তালিকার ১১ নম্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি ক্যাম্পাসের ১৭টি ফ্যাকাল্টিতে ৩৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। বিশ্বের ১০০টি দেশের শিক্ষার্থী পড়েন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে

কিউএস প্রতিবছর কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক একটি র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা, উদ্ভাবন, চাকরিতে স্নাতকদের কর্মক্ষমতা, প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাফল্য, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক, গবেষণা প্রবন্ধের সাইটেশন, পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সংখ্যা, আন্তর্জাতিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপাত, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী বিনিময়ের হার বিচার করেই এ তালিকা করা হয়।