সারাদেশ ২২ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৫:২৬

সিলেটে সড়কে আন্দোলন, দুর্ভোগে যাত্রাপথের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেটের সকল পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’র ডাকা ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সমাধান না হওয়ায় সিলেট বিভাগে তিনদিনের এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করবেন পাথর সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমিক।

জানা গেছে, ভোর ৬টা থেকে ধর্মঘট হলেও এর আগ থেকেই সিলেটের বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নেন পরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। তারা কোনো অবস্থাতেই কোনো ধরনের রাস্তায় চলতে দিবেন না বলে জানিয়েছেন। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের তেমুখি, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চন্ডিপুল ও তেলিবাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও রাস্তায় পিকেটিং করছেন শ্রমিকরা।

বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা গেছে, রিকশা ছাড়া চলছেন না কোনো ধরনের যানবাহন। পায়ে হেটে অনেকেই যাচ্ছেন কর্মস্থলে। পথে পথে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ।

উল্লেখ্য, টানা ৯৬ ঘণ্টার কবলে পড়েছেন সিলেটের মানুষ। সিএনজি অটোরিকশা ও পাথর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের পৃথকভাবে ডাকা টানা ৪ দিনের প্রথম দিন ছিলো সোমবার। তাদের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন চলছে আজ। এরই মাঝে শুরু হলো ৭২ ঘণ্টার সকল ধরনের পরিবহন ধর্মঘট।

যদিও সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের আহ্বানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠকে উদ্ভূত পরিস্থিতির কোনো সমাধান না হওয়ায় ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ নেতৃবৃন্দ।

সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল এ বিষয়ে বলেন, ‘সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের ডাকে সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে আমাদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএমসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি তুলে ধরেছিলাম। বলেছি ১০ লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার্থে সিলেটের সকল পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া হোক। পরিবেশ বিধ্বংসী বোমামেশিন নয়, শ্রমিকদের মাধ্যমে আমরা পাথর উত্তোলন করতে চাই। এতে সরকারও যেমন লাভবান হবে, তেমনি দু-বেলা দু-মুঠো ভাত খেয়ে ১০ লক্ষাধিক মানুষ বাঁচতে পারবে।

কিন্তু আজকের (সোমবারের) বৈঠকেও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদের মতামত বা দাবিকে গুরুত্ব দেননি। তাই আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছি। মঙ্গলবার ভোর ৬ টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা তিনদিন পুরো সিলেট বিভাগে সকল ধরনের পরিবহন ধর্মঘট চলবে। আমরা সকাল থেকেই রাস্তায় নেমে পড়বো আমাদের নায্য দাবি আদায়ে।’

গোলাম হাদী ছয়ফুল জানান, তবে এম্বুলেন্স, বিদেশ যাত্রী, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্র ও জরুরি ঔষধ বহণকারী গাড়ি ধর্মঘটের আওতায় থাকবে না।’