ধর্ম ও জীবন ২৮ জুলাই, ২০১৯ ১২:১১

নবী রসুলগণ উত্তম জীবনাচারের প্রতীক

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসহ সব আম্বিয়ায়ে কিরাম ছিলেন সর্বোত্তম জীবনাচারের প্রতীক। আমরা যদি তাদের জীবনাদর্শকে ধারণ করতে পারি, তবে আমাদের জীবনও আলোকোজ্জ্বল জীবনে পরিণত হবে। আবদুল্লাহ ইবনে সারজিস (রা.) থেকে বর্ণিত। 

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘উত্তম জীবনাচার, বিনয় ও নম্রতা এবং মধ্যম পন্থা অবলম্বন নবুয়তের চব্বিশ ভাগের এক ভাগ।’ তিরমিজি থেকে মিশকাতে। উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্টত বোঝানো হয়েছে, এ অভ্যাসগুলো আম্বিয়ায়ে কিরাম আলাইহিমুস সালামের জীবনচরিতের উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য। যে ব্যক্তি এ চরিত্র-বৈশিষ্ট্যগুলো যত অধিক পরিমাণে আয়ত্ত করতে পারবে, সে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে তত বেশি পূর্ণতা অর্জন করবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যম পন্থা অনুসরণে গুরুত্ব দিতেন। মধ্যম পন্থা অবলম্বনের উপায় হলো, জীবনের যাবতীয় ব্যাপারে বাড়াবাড়ির পথ পরিহার করে সুষ্ঠু ও ভারসাম্যপূর্ণ নীতি গ্রহণ করা। কৃপণতা ও অপচয় দুটিই বাড়াবাড়ির পর্যায়ভুক্ত। পক্ষান্তরে বদান্যতা ও দানশীলতার নীতি গ্রহণ করাই ভারসাম্যপূর্ণ কর্মপন্থা। ইসলামী শরিয়ত জীবনের প্রতিটি ব্যাপারে মধ্যম পন্থা অবলম্বনের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। ইসলামে ভারসাম্যপূর্ণ কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যকে উপদেশ বা সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তা যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত করাই হলো রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। আম্মার (রা.) থেকে বর্ণিত। 

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি : কোনো ব্যক্তির দীর্ঘ নামাজ ও সংক্ষিপ্ত ভাষণ তার সূক্ষ্ম জ্ঞানেরই পরিচায়ক। অতএব তোমরা নামাজ দীর্ঘ কর এবং ভাষণ সংক্ষেপ কর । নিশ্চয়ই কোনো কোনো ভাষণে জাদুকরী প্রভাব রয়েছে।’ মুসলিম থেকে মিশকাতে। হাক্কানি আলেমগণ উপরোক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, যে নামাজ একাকী পড়া হয় তা ইচ্ছামতো দীর্ঘ করা যায়। কিন্তু জামাতের নামাজ সংক্ষেপে পড়ার জন্য রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ রয়েছে। বুখারি, মুসলিম। কেননা জামাতে দুর্বল, বৃদ্ধ, নারী ও বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত লোকও উপস্থিত হয়। সাময়িক আবেগের বশবর্তী হয়ে কিছু কাজ করার পর দীর্ঘকাল নীরব থাকার তুলনায় ধৈর্যসহকারে কোনো কাজ নিয়মিত করতে পারলে তা পরিমাণে কম হলেও পরিণামের দিক থেকে অনেক উত্তম। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যে কাজ নিয়মিত ও স্থায়ীভাবে করে তা (পরিমাণে কম হলেও) আল্লাহর কাছে অতীব প্রিয়।’ বুখারি, মুসলিম থেকে মিশকাতে।

লেখক : ইসলাম বিষয়ক গবেষক।