ডেস্ক রিপোর্ট
বেড়েই চলছে ভোজ্য তেলের দাম। বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে ব্যবসায়ীদের বৈঠকেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাতে বেড়েই চলছে ভোজ্যতেলের দাম।
রাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল শুক্রবার আরেক দফা বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তাদের গতকালের খুচরা বাজারদরের প্রতিবেদনে এক দিনেই প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনে কোম্পানিভেদে ৫ থেকে ১০ টাকা দাম বাড়ার বিষয়টি জানিয়েছে।
সব মিলিয়ে গত দেড় থেকে দুই মাসের ব্যবধানে প্রতি লিটার সয়াবিনে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সাথে দাম বেড়েছে পাম অয়েল ও পামসুপারেরও। ফলে ভোগান্তিতে ভোক্তারা।
ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে ভোক্তাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি এমন অজুহাতে একটি চক্র কারসাজি করছে ভোজ্য তেল নিয়ে। তারা দফায় দফায় দাম বাড়াচ্ছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম ওঠানামা করছে যে কারণে দেশের আমদানিকারকরা লোকসানের ভয়ে একসঙ্গে বেশি পরিমাণে ভোজ্য তেল কিনছেন না। তারা বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন ১ হাজার ১০০ ডলার ও পাম অয়েল ১ হাজার ৫০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এই দর ২০-২৫ দিন আগে ১০০ থেকে ১৫০ ডলার পর্যন্ত কমেছিল। আর গত বছর জুলাইয়ে প্রতি টন সয়াবিনের দাম ছিল ৭০০ ডলার। দেশে চাহিদার ৯০ শতাংশ ভোজ্য তেল আমদানি করা হয় জানিয়ে তারা বলেন, দেশে যে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে তা আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব।
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদার তুলনায় সয়াবিন ও পাম অয়েলের সরবরাহ কম। কারণ, আর্জেন্টিনায় দীর্ঘদিন ভোজ্য তেল মিলগুলোতে শ্রমিক ধর্মঘট চলেছে। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন আমদানি করা হয়। এছাড়া মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম অয়েল আমদানি করা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, করোনা মহামারির কারণে গত বছর আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চীন ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে ভোজ্য তেল আমদানি করেছে। চলতি বছরও তারা তাদের চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণে ভোজ্য তেলের অর্ডার করেছে। এসব কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদার তুলনায় ভোজ্য তেলের সরবরাহ কম। এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে।
গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন কোম্পানিভেদে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১১৮ থেকে ১২০ টাকা, পামসুপার ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, পাম অয়েল ১০০ থেকে ১০২ টাকায় বিক্রি হয়।
সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে গত এক বছরে বোতলজাত সয়াবিন তেলে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ ও খোলা পাম অয়েলে ৩২ দশমিক ৬৭ শতাংশ দাম বেড়েছে।
সম্প্রতি সচিবালয়ে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য কমবেশি হওয়ার কারণে দেশে তা ওঠানামা করে। তাই সমস্যার গভীরে গিয়ে আমরা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছি।