জাতীয় ১৮ মার্চ, ২০২১ ০৯:৩৭

কোন দিন কোন রাস্তায় যাবেন রাষ্ট্রপ্রধানরা

ডেস্ক রিপোর্ট

রাজধানীবাসীকে ১৭ থে‌কে ২৬ মার্চ ১০ দিন চলাচল সীমিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অতিথিদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই অনুরোধ জানানো হয়।

বিদেশি ভিভিআইপি অতিথিদের আগমন এবং আয়োজিত অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভিভিআইপি অতিথিদের চলাচল, অনুষ্ঠানস্থল ও থাকার জায়গা ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ভিভিআইপিসহ বিদেশি অতিথিরা যেসব হোটেলে অবস্থান করবেন সেসব হোটেলের ভেতরে ও বাইরে ইউনিফর্মে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য মোতায়েন থাকবে। তারা হোটেলের যে ফ্লোরে অবস্থান করবেন সেখানে অন্য কোনো অতিথি অবস্থান করতে পারবেন না।

ঢাকা মহানগরীর যেসব রাস্তা দিয়ে ভিভিআইপিরা আসা-যাওয়া করবেন সেসব সড়কেও থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ভিভিআইপিদের গমনাগমনের সময় রাস্তার ফুটপাত ও ফুটওভার ব্রিজে কেউ চলাচল করতে পারবেন না। ভিভিআইপিরা চলাচলের সময় কেউ যেন অসৌজন্যমূলক বস্তু/পোস্টার/ব্যানার প্রদর্শন করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, কোনো স্থানে নিরাপত্তা ঝুঁকি যাতে না থাকে সেজন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিএমপি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে সোনারগাঁ হোটেলের আশপাশ যেমন বাংলামোটর, মগবাজার, কাওরান বাজার ও এর আশে-পাশের এলাকায় ব্লক রেইড চালানো রয়েছে।

বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের বাংলাদেশ সফর ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। যেন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অতিথি, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান সম্পর্কে উস্কানিমূলক পোস্ট, ছবি, বিরূপ মন্তব্য ও গুজব ছড়াতে না পারে। এছাড়া, বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন ও ধর্মীয় উগ্রবাদী সংগঠনের কর্মকাণ্ডের ওপর কঠোর নজরদারি রয়েছে।

ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। তাই ১৭ থকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত খুব বেশি প্রয়োজন না হলে চলাচল সীমিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন আইজিপি।

অতিথিদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া এবং সাতক্ষীরা জেলার যশোরেশ্বরী দেবী মন্দিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। এজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ছাড়াও পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), ঢাকা জেলা, গোপালগঞ্জ জেলা ও সাতক্ষীরা জেলা পুলিশকে সম্ভাব্য যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় পূর্ব পরিকল্পনা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডিভিআইপি ডিউটিতে নিয়োজিত পুলিশ ইউনিটগুলোতে ছুটি নিরুৎসাহিত করতে বলা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান চলবে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। অনুষ্ঠানমালায় প্রতিদিন পৃথক থিমভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অডিও-ভিজুয়াল এবং অন্যান্য বিশেষ পরিবেশনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

দশ দিনের অনুষ্ঠানমালায় ১৭, ২২ এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ১৭, ১৯, ২২, ২৪ এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।

১৭ মার্চের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, ১৯ মার্চ শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, ২৪ মার্চ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন।

জেনেনিন রাষ্ট্রপ্রধানদের যাতায়াতের সময়সূচি:

২০ মার্চ

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে বিকাল ৫টা ৩৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাবেন।

২২ মার্চ

  • রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে রওনা দিয়ে সকাল ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাবেন। এরপর আবার তিনি বঙ্গভবনে ফিরবেন।
  • নেপালের প্রেসিডেন্ট সকাল সাড়ে ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পৌঁছাবেন। এরপর বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে হোটেল থেকে বেরিয়ে ৩টা ৫৫ মিনিটে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে যাবেন তিনি।
  • রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে বঙ্গভবন থেকে বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে যাবেন।
  • নেপালের প্রেসিডেন্ট সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে রওনা দিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ফিরবেন।

২৩ মার্চ

  • হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে দুপুর ২টায় বেরিয়ে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বারিধারায় যাবেন নেপালের প্রেসিডেন্ট।

২৪ মার্চ

  • ভুটানের প্রেসিডেন্ট দুপুর ২টা ৫ মিনিটে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে বেরিয়ে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবেন।
  • প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে রওনা দিয়ে বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে পৌঁছাবেন ভুটানের প্রেসিডেন্ট।
  • ভুটানের প্রেসিডেন্ট বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে বিকাল ৫টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে যাবেন।

২৫ মার্চ

  • হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে ভুটানের প্রেসিডেন্ট সকাল ৮টায় রওনা দিয়ে সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাবেন।

২৭ মার্চ

  • ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাবেন।