ধর্ম ও জীবন ২৪ অক্টোবর, ২০২২ ০২:২৯

আজ শ্যামাপূজা ও দীপাবলী উৎসব

নিউজ ডেস্ক: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্যামাপূজা আজ । অশুভ শক্তির অন্ধকার ঠেলে মন্দির থেকে ভক্তের গৃহকোণে আজ জ্বলে উঠবে সহস্র প্রদীপ। আলোয় আলোকিত হবে চারদিক। প্রতি বছর দুর্গাপূজার বিজয়ার পরবর্তী বা কার্তিক মাসের অমবস্যা তিথিতে পূজিতা হন দেবী শ্যামা। এ পূজা দীপাবলি বা ‘দিওয়ালি নামেও পরিচিত। ‘দীপাবলি বা ‘দিওয়ালির অর্থ প্রদীপের সারি। শারদীয় দুর্গোৎসবের পরপরই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব এটি।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দেবী শ্যামা শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার প্রতীক। হিন্দু পুরাণ মতে, দেবী শ্যামা দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল শব্দ থেকে কালি নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মধ্য দিয়ে ভক্তের জীবনে কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে পৃথিবীতে আগমন ঘটে দেবী শ্যামার। অধিকাংশ দেব-দেবীর পূজা দিনে হলেও শ্যামা পূজা হয় রাতে।

দশ মহাবিদ্যার প্রথম মহাবিদ্যা হচ্ছেন শ্যামা। দেবীর আবির্ভাব সম্পর্কে নানা পুরাণ ও তন্ত্রে বহু তথ্য আছে। পুরাণে বলা হয়েছে, দেবাসুরের যুদ্ধে পরাজিত দেবগণের প্রস্তুতিতে আদ্যাশক্তি ভগবতীর দেহকোষ থেকে দেবী কৌষিকী আবির্ভূত হন। এছাড়া দেবী শ্যামার বিভিন্ন রূপের কথা বলা হয়েছে বঙ্গীয় তন্ত্রসার, শ্যামা রহস্য বিবিধ তন্ত্রে। তার রূপের মধ্যে রয়েছে- দক্ষিণ, সিদ্ধ, ভদ্র, শ্মশান, রক্ষা ও মহাকালী। এই দিন সন্ধ্যায় মৃত নিকটজনদের মঙ্গল কামনায় জলে প্রদীপ ভাসান অনেকে। শ্যামা পূজায় সাধারণত পাঁঠা, ভেড়া বা মহিষ বলি দেয়া হয়।

সনাতনী হিন্দু ধর্মীয় মতে, ত্রেতা যুগে ১৪ বছর বনবাস থাকার পর নবমীতে শ্রীরাম রাবণ বধের বিজয় আনন্দ নিয়ে দশমীতে অযোধ্যায় ফিরে আসেন। রামের আগমন বার্তা শুনে প্রজাকুল তাদের গৃহে প্রদীপ জ্বালিয়ে আনন্দ উৎসব পালন করেন। এই উৎসবকে দীপাবলি উৎসব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আবার বৈষ্ণব শাস্ত্রীয় মতে কার্তিক মাস তথা দামোদর মাসেই স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার মাতৃস্নেহের বন্ধনে আবদ্ধ হন। ভক্তির রশিতে ভগবান ভক্তের হাতে বন্দি। এই দামোদর মাস ভগবানের প্রিয় মাস। এ মাসে ভগবানের উদ্দেশে যা কিছু করা হয় তার অক্ষয় ফল প্রদান করেন ভগবান।

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, রমনা কালী মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, জয়কালী মন্দিরসহ পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, সূত্রাপুর এলাকায় মণ্ডপে মণ্ডপে শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামা পূজা বা কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হিন্দু পুরাণ মতে কালী দেবী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষারকালশব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা।

লোকবিশ্বাস অনুযায়ী- কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামসহ শ্মশানকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন মঠ, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, সবুজবাগ থানাধীন শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, পুরান ঢাকার রাধাগোবিন্দ জিঁও ঠাকুর মন্দির, পোস্তাগোলা মহাশ্মশান, তাঁতী বাজার, শাখারী বাজার, বাংলাবাজারসহ বিভিন্ন মন্ডপ মন্দিরে শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

আমাদের কাগজ/ইদি