আন্তর্জাতিক ২৬ অক্টোবর, ২০২২ ০১:৪২

কংগ্রেস থেকে হু জিনতাওকে সড়ানো নিয়ে নতুন বিতর্কে চীন

ছবি:ইন্টারনেট

ছবি:ইন্টারনেট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কয়েকদিন আগে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০ তম কংগ্রেসে আবারও কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ ফোরামের প্রধান হলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে কংগ্রেস চলাকালে একটি সেশন থেকে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওকে নাটকীয়ভাবে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে।

সাম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়,হু’র বামে বসা পলিটব্যুরোর বিদায়ী সদস্য লি ঝানশুকে সাবেক প্রেসিডেন্টের হাত থেকে একটি নথি সরিয়ে নিতে ও তার সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে দীর্ঘ নির্দেশনা দিতেও দেখা গেছে, ওই ব্যক্তিই পরে হু’কে মঞ্চ ছেড়ে যেতে রাজি করানোর চেষ্টা করেন ও হাত ধরে তাকে বাইরে নিয়ে যান।

দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া পরে টুইটেও জানায়, অসুস্থ বোধ করায় হু’কে মঞ্চ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। চীনে টুইটার নিষিদ্ধ থাকায় দেশটির জনসাধারণ অবশ্য সিনহুয়ার এই ভাষ্য জানতে পারেনি।

হু’কে সরিয়ে নেওয়ার ওই ঘটনার পরদিনই সিপিসির শীর্ষকর্তা হিসেবে শি’র তৃতীয় মেয়াদ শুরুর ঘোষণা আসে; এবার দলের পলিটব্যুরোতেও তার অনুগতরাই আরও জেঁকে বসেছে বলেও ভাষ্য পশ্চিমা গণমাধ্যম ও বিশ্লেষকদের।

হু জিনতাও ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত চীনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সেসময় তিনি দেশকে বাইরের বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত করার প্রয়াস নিয়েছিলেন বলেই মনে করা হয়। অন্যদিকে শি এমন একটা দেশ পরিচালনা করছেন, যেটি ক্রমশ নিজেকে পশ্চিমাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।

চ্যানেল নিউজ এশিয়ার ওই ফুটেজ ‘হুর অসুস্থতা’ সংক্রান্ত চীনা সরকারের অবস্থান খারিজ না করলেও সাবেক প্রেসিডেন্টের সামনে থাকা নথিটিও যে তাকে সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে।

হু’কে নিয়ে যাওয়ার সময় মঞ্চের সামনের সারিতে বসে থাকা বাকি নেতৃত্বকে তার দিকে ঘুরে তাকাতেও দেখা যায়নি। কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা স্টাডি টাইমসের সাবেক সম্পাদক দেং ইউয়েন বলেছেন, চারপাশে এত এত ক্যামেরা, এর মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকে হু’র পড়ার অধিকার নেই এমন কোনো নথি তার সামনে রাখার কোনো কারণই নেই।

“এটা অবশ্যই একটা অস্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ওই নথিতে কী ছিল, এবং ওই সময়ে ঘটনাস্থলে কী নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল সে বিষয়ে আরও তথ্যপ্রমাণ না পাওয়া গেলে কেউই এই ঘটনার ব্যাখ্যা করতে পারবে না,” বলেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রভাষক ওয়েন-টি সুংও বলছেন, নতুন ফুটেজ থেকেও কোনো ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না।

“চীন মূলত কঠোর শৃঙ্খলার ভেতর চলে, বিশেষ করে এমন উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্টগুলোতে, আরও বিশেষত শি’র জমানায়, যেখানে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে,” বলেছেন তিনি।

 

আমাদের কাগজ//টিএ