অর্থ ও বাণিজ্য ৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০২:৩৩

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

মেলার তৃতীয় দিনেও বিক্রেতাদের নাভি শ্বাস

ছবি:সংগ্রহীত

ছবি:সংগ্রহীত

আমাদের কাগজ,নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ নতুন বছরে শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশে শুরু হয়েছে  আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। শুরুতে মেলাকে ঘিরে নানা কৌতূহল থাকলেও মেলার তৃতীয় দিনে ক্রেতার দেখা পাচ্ছে না স্টলগুলো বলে দাবি জানিয়েছেন ব্যাবসায়ীরা। 

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূর্বাচল নতুন শহরের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার তৃতীয় দিন আজ। মেলার তিন দিন পেরোলেও এখনও তেমন ক্রেতার দেখা পাচ্ছে না স্টলগুলো। তুবও ক্রেতার আশায় মেলায় অংশ নেওয়া স্টলে পণ্যের পসরা নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, এখন মেলার প্রথম দিক। তাই ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি আসছেন। তবে সপ্তাহ গেলে জমবে বাণিজ্য মেলা।

অন্যদিকে এখনো মেলার কয়েকটি স্টলে গোছগাছের কাজ চলতে দেখা গেছে। আংশিক স্টলের কাজ শেষ হলেও কেউ কেউ মালামাল সাজাতে ব্যস্ত। তবে বিবিসিএফইসির বাইরে ছোট পরিসরে মেলার আদলেই যেনো বাজার বসেছে। মেলা প্রাঙ্গণের সড়কঘেঁষে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা ছোট ছোট দোকানের বেশিরভাগই খাবার হোটেল। এসব দোকান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটাচ্ছে এমন অভিযোগ করেন অনেকেই। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।

মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয়, খাবারের কিছু দোকানীদের সাথে। আক্ষেপের স্বরে তারা জানান, প্রতিবছরই মেলার শুরুতে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি আসেন। অনেকেই মেলার পরিবেশ দেখতে আসেন। তবে যারা প্রথম দিকে মেলায় আসেন তারা কেনাকাটার জন্য মেলার মাঝামাঝি সময়টাকেই বেছে নেন।

একই কথা বলেন রায়হান ফ্যাশনের সেলস এক্সিকিউটিভ সাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, মেলার দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সাধারণত কেনাকাটা জমে উঠে। তবে এর মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলে সেসব দিনগুলোতেতও প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থী আসেন। আমরা আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই কেনাকাটা জমে উঠবে।

পরিবার নিয়ে খিলক্ষেত থেকে এসেছেন সাইমুন ইসলাম। তিনি বলেন, আজ অফিস থেকে একটু আগেই বের হয়েছিলাম। এখন মেলাতে ভিড় কম, তাই ঘুরতে আসা। তবে ঘোরা মানেই শুধু ঘোরাঘুরি না, পছন্দের পণ্য পেলে অবশ্যই কেনার ইচ্ছা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমতিয়াজসহ চার বন্ধু মেলাতে এসেছেন। ইমতিয়াজ বলেন, আমরা বন্ধরা মিলে প্রায়ই বিভিন্ন স্থানে ঘুরি। মেলায় প্রথম দিকে ভিড় কম হবে, তাই ঘুরতে এলাম। 

রাস্তা ভালো না থাকায় গত বার আসা হয়নি, এবার আগেই এলাম। 

এদিকে মেলার মেইন গেট সংলগ্ন সড়কের সামনে একাধিক দোকান আর ভাসমান হকার মালামাল বিক্রি করছেন। রয়েছে ঝালমুড়ি আর ফুসকার এককাধিক দোকানও। ভিক্ষুকেরও দেখা মিলছে একাধিক।এমনটা আন্তর্জাতিক মানের মেলাকে ম্লান করছে বলে অনেকেই অভিযোগ দিয়েছেন।

মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াত সুবিধায় গত বছরের মতো শাটল সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে। কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে এক্সিবিশন সেন্টার পর্যন্ত ৭০টি বিআরটিসি বাস চলাচল করছে। এসব বাসের ভাড়া ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকছে। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন মেলা রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

মেলায় প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৪০ টাকা, আর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। তবে অনলাইনে টিকিট কিনলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ রয়েছে। প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে মেলায়।

উল্লেখ্য,২০২১ পর্যন্ত এই বাণিজ্য মেলা শেরেবাংলা নগরে আয়োজিত হত। ২০২২ থেকে এই বাণিজ্য মেলা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজিত হচ্ছে। পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে ২০ একর জমির ওপর স্থায়ী বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।

আমাদের কাগজ/এমটি