মুক্তমত ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৩:৩৩

কেন ইরাক কুয়েতের খনি জ্বালিয়ে দেয়!

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদন,তুষার আহম্মেদঃ তেলের জন্য কম যুদ্ধ ঘটাননি' বৈশ্বিক দেশ গুলো। শুধু মাত্র তেলের জন্য পাঁচ যুদ্ধ।শুনতে অবাক মনে হতে পারে তবে আসলেই সত্যি। ১৯৯১ সালের প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ।প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের আগে যেসব যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হতো, সেগুলোতে একটা জনপ্রিয় শ্লোগান ছিল 'তেলের জন্য রক্ত নয়'। এই যুদ্ধে তেলের স্বার্থ যে সবচেয়ে বড় ছিল তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।ইরাক মূলত এই তেল সম্পদের লোভেই প্রতিবেশি কুয়েত দখল করে নেয়। সাদ্দাম হোসেন অবশ্য কুয়েতকে তাদের একটি প্রদেশ হিসেবে দাবি করে। (বিবিসি নিউজ) 

উনিশশ' একানব্বই সালের ইরাক যুদ্ধের পর কুয়েত থেকে পশ্চাদপসরণরত ইরাকি বাহিনী কুয়েতের তেলক্ষেত্রগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল - যা জ্বলেছিল মাসের পর মাস।একে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়। সেই আগুন নেভাতে আনা হয়েছিল বিশেষজ্ঞ অগ্নিনির্বাপকদের। আর যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা যে কুয়েতকে দখলমুক্ত করতে চেয়েছে, সেটাও তেলের স্বার্থেই। তারা চেয়েছে কুয়েতের বিপুল তেলের সরবরাহ যেন তাদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

জানা যায়, উপসাগরীয় যুদ্ধের সূচনা ২ আগস্ট, ১৯৯০ সালে। ১৯৯১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে।   

প্রসঙ্গত,জানুয়ারি মাস ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় ঘটনা।  বছরের পর বছর পেছনে ফিরে তাকালে এমন অনেক ঘটনা, অনেক আলোচিত-সমালোচিত ব্যক্তির জন্ম-মৃত্যু জানতে পারি আমরা। ইতিহাসে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব এ দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যুসহ ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা। 

১৯৯১ সালের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম নামে সমধিক পরিচিত এই যুদ্ধের সংঘটিত হয় ইরাক এবং ৩৪টি দেশের জাতিসংঘ অনুমোদিত যৌথ বাহিনীর মধ্যে। ১৯৯০ সালের আগস্ট মাসে ইরাকের কুয়েত আগ্রাসন এবং কুয়েতি ভূ-খন্ড দখলের প্রেক্ষতে ইরাকি বাহিনীর হাত থেকে কুয়েতকে মুক্ত করাই ছিল এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য। জ্বালিয়ে দেয় কুয়েতের আল ওয়াফবার খনি। 

উল্লেখ্য, উপসাগরীয় যুদ্ধের আগে ইরাক এবং ইরানের মধ্যে যুদ্ধ ছিল প্রায় আট বছর ধরে(১৯৮০-৮৮)। এই যুদ্ধে ইরাক এবং ইরান উভয় দেশেরই সামরিক এবং অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়তে হয়। এতে করে ইরাকের ঘাড়ে অনেক ঋণ জমে যায়। ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেন মনে করতেন যদি কুয়েত আক্রমণ করে কুয়েতের ভূগর্ভে মজুতকৃত তেলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে আনা যায় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে তারাই হর্তাকর্তা হয়ে উঠবে। তাই সাদ্দাম হোসেন প্রায় দশ লাখের বিশাল সামরিক বহর নিয়ে কুয়েত আক্রমণ করে।

আমাদের কাগজ/এমটি