আইন ও আদালত ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৯:১৮

নাসির-তামিমার অভিযোগ গঠনের শুনানি ২৮ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : তামিমা সুলতানা তাম্মিকে বিয়ে করেন ক্রিকেটার নাসির হোসেনের তালাক যথাযথভাবে হয়নি এমন অভিযোগ তুলে দুই বছর আগে তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলার তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ মামলার ১১ মাসের মাথায় আদালত নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

অভিযোগ গঠনের সময় মামলায় দায় থেকে তাম্মির মা সুমি আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর দু’পক্ষই মহানগর আদালতে যান রিভিশনে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এদিন জানা যাবে নাসির-তামিমার মামলা চলবে কিনা। আর সুমি আক্তার অব্যাহতি পাবেন নাকি আসামি হবেন।

রাকিব হাসান বলেন, মামলার মামলার শেষ দেখতে চাই এবং তাদের শাস্তি চাই। পিবিআই তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সতত্যা পেয়েছে। এ মামলায় বিচার শুরু হলেও সেটা আটকে গেছে। আমার তো কিছু করার নেই, আইনের গতিতে এ মামলা চলবে। শেষ দেখা না পর্যন্ত যা করা লাগবে তাই করবো। আদালতে তাদের শাস্তি নিশ্চিতে সব চেষ্টা চালিয়ে যাবো। এ মামলায় তাদের শাস্তি চাই।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, এ মামলার তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম দ্রুত শুরু হয়। তবে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করার কারণে মামলাটির বিচারকাজ আটকে গেছে। যেকোনো মামলার ক্ষেত্রই দীর্ঘদিন সময় পার হলে মামলায় ন্যায় পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়। এ মামলায়ও আমরা তেমন আশঙ্কা করছি।

নাসির-তামিমাসহ তিন আসামি ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি মাসে আদালতে উপস্থিত হন। এরপর তাদের নির্দোষ দাবি করে অব্যাহতির আবেদন আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু। অন্যদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। এরপর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত নাসির-তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে, এ মামলার অপর আসামি তামিমার মা সুমি আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা নিম্ন আদালতের মামলায় বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৬ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করেন। আদালত রিভিশনটি গ্রহণ করে নথি তলব করেন। সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান। প্রায় এক বছর পর গত ৩১ জানুয়ারি ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদের আদালত বাদীপক্ষ ও আসামিপক্ষের আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন। চলতি মাসের ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এদিন ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিচার চলবে কি না এবং মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পাওয়া নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তার আবারও বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন কি না, তাও জানা যাবে।

২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মির স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা করেন। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো. মিজানুর রহমান তিনজনকে দোষী উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাকিবকে তালাক দেননি তামিমা। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেওয়ার ফলে তামিমা তাম্মি এখনো রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মির বিয়ে অবৈধ।

আমাদেরকাগজ/ এইচকে