অর্থ ও বাণিজ্য ৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০৪:৫৫

বেড়েছে জাকাতের কাপড়ের দাম

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ প্রতিটি মুসলিমের সম্পদের উপর যাকাত ওয়াজিব। এবারের যাকাতে পরিমাণ সম্পদ থাকলে বিঘ্ন ঘটতে পারে যাকাতে। জানা যায়, রোজা আসলেই বেড়ে যায় জাকাতের কাপড় বিক্রি। আর জাকাত দাতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ীরাও নেন বাড়তি প্রস্তুতি। বরাবরের মতো এবারও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। এরই মধ্যে জাকাতের কাপড় বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। ক্রেতা ভালো পাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও খুশি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার জাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গির দাম একটু বেশি। 

 রাজধানীতে যে কয়টি মার্কেটে জাকাতের পোশাক পাইকারি বিক্রি হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি গুলিস্থান।  

নগরীতে অবস্থিত জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থিত পীর ইয়ামেনী মার্কেট। মার্কেটটির নিচতলায় শতাধিক প্রতিষ্ঠান যাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গি পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করেন প্রতিবারে। এবারও তার ভিন্নতা দেখা যায়নি। 

রোববার সরজমিন এ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা থরে থরে যাকাতের শাড়ি, লুঙ্গি সাজিয়ে রেখেছেন। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের সামনে শোভা পাচ্ছে এখানে জাকাতের শাড়ি বিক্রি করা হয় আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের শোভা পাচ্ছে এখানে জাকাতের লুঙ্গি বিক্রি করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেতারা চাহিদা অনুযায়ী শাড়ি, লুঙ্গি কিনছেন।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার জাকাতের জন্য যেসব শাড়ি বিক্রি হচ্ছে তার দাম ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা। তবে কেউ চাইলে এর থেকে বেশি দামের শাড়িও জাকাতের জন্য কিনতে পারেন। 

অন্যদিকে যাকাতের লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। শাড়ির মতো কেউ চাইলে দামি লুঙ্গিও জাকাদের জন্য কিনতে পারেন।

রাজধানীতে বসবাস করেন নিলুফা পারভিন। তিনি জানান, আমরা প্রতিবার ২০০ মানুষকে যাকাত দিয়ে থাকি। তবে এবার নিত্য পণ্যের সাথে বাজারের ভোগ-বিলাসের প্রতিটি জিনিসেরই দাম বেশি হওয়ায় যাকাত নিয়ে সংশয় জানান তিনি। 

অন্যদিকে রাজধানীতে একটি ফ্যাটের মালিক সরোয়ার মিয়া জানান, বিগত বছর গুলোতে আমরা সমান ভাবে যাকাতের সামগ্রী দিয়ে আসলেও এবার আসলে কতখানি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারব তা জানা নেই। 

তিনি জানান ,প্রতি বারের যাকাতে পরিমাণ থেকে এবার অনেকটাই কমে আসবেন তারা। আগে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষকে জাকাত দিলেও এবার 
১৫০ এর মধ্যে সেরে ফেলতে চান তিনি। 

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবার শাড়ি ও লুঙ্গির দাম পিস প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। গত বছর যে লুঙ্গি ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেই লুঙ্গি ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর গত বছর যেসব সাড়ে সাড়ে তিনশ টাকা বিক্রি হয়েছে এবার তা চারশ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

তারা আরও জানান, গত বছরের তুলনায় এবার জাকাতের শাড়ি, লুঙ্গি বিক্রি তুলনামূলক ভালো। তবে খুব বেশি ভালো তা বলা যাবে না। কারণ এখন অনেকে শাড়ি, লুঙ্গির বদলে জাকাত হিসেবে টাকা দেন। আর জাকাতের কাপড় অল্প লাভে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ক্রেতাদের সঙ্গে খুব বেশি দরদাম করা হয় না। সাধারণ সময়ে যে দামে জাকাতের কাপড় বিক্রি করা হয় বাড়তি চাহিদার সময়েও সেই দামেই বিক্রি করা হয়।

বিক্রি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যাবসায়ীরা জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বিক্রি মোটামুটি ভালো। তবে এখন অনেকে জাকাত হিসেবে নগদ টাকা দেয়। সে কারণ যাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গি তুলনামূলক কম বিক্রি হয়। তারপরও এবার যা বিক্রি হয়েছে তাতে আমরা খুশি। সামনে আরো বিক্রি হবে বলে আশা করছি। 

জাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গির দামের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাবসায়ীরা বলেন, এবার ডলার দাম কতো বাড়ছে? সুতার দামও অনেক বেড়েছে। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবেই শাড়ি ও লুঙ্গির দাম এবার একটু বেশি হবে। তবে জাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গির দাম খুব বেশি বাড়েনি। পিস প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকার মতো বেড়েছে।

আমাদের কাগজ/এমটি