অর্থ ও বাণিজ্য ১০ মে, ২০২৩ ০৩:২১

পেঁয়াজে ঝাঁজ, আদায় আগুন ধরাছোয়ার বাইরে চিনি, ক্রেতার নাভিশ্বাস

আমাদের কাগজ রিপোর্ট: সর্বশেষ বাজারের তথ্য অনুযায়ী প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩১০ টাকা করে। যা গত এক মাস আগেও ১৪০-২২০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। কেজিতে ২৫-৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা, ২০-২৫ টাকার আলুর কেজি ৪০ টাকা ও ১২৫ টাকার চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা করে।

ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজের। আদায় লেগেছে আগুন। চিনিতে মজুদ সংকট দেখিয়ে চলছে যাচ্ছেতাই। হঠাৎই গত ৫ মে আরও এক দফা বেড়েছে ভোজ্য তেলের দাম। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম হয়েছে আকাশচুম্বী। অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে দ্বিগুণের বেশি দাম বাড়তেও দেখা গিয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো কারণই ছাড় দেন না আমাদের ব্যবসায়ীরা। কোনো না কোনো ছুতা পেলেই মজুদ সংকট দেখিয়ে অস্থির করে তোলেন নিত্যপণ্যের বাজার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নিত্যপণ্যের বাজারে উত্তাপ দেখা দেয়। মুখিয়ে থাকা অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ইউরোপের যুদ্ধের প্রভাবকে টোপ হিসেবে কাজে লাগিয়ে দেশের ভোজ্য তেলের বাজারে অস্থির করে তুলে। সরকার নানা সময় পদক্ষেপ নিয়েও চালকের আসনে বসা ব্যবসায়ীদের সরাতে পারেনি। উল্টো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমঝোতা করে বাজার সমন্বয় করেছে। তবে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীরা শক্তিশালী এটি আপনাকে স্বীকার করতেই হবে। এমপি, মন্ত্রী থেকে শুরু যেহেতু সব স্থানে তাদের আধিপত্য রয়েছে। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারের আমলারা ব্যবসায়ীদের থেকে সুবিধা নিয়ে জনগণের ক্ষতি করছে। এর একটা বড় উদাহরণ হতে পারে, ব্যবসায়ীরা যখন যা দাবি করছেন তারা তাই মেনে নিচ্ছেন। তবে সব কিছু ছাপিয়ে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো। তাদের সদিচ্ছা নেই বলেই অবৈধ মজুদকারী ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, নতুন করে বাজারে আলু-পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তারা ভাবছে চিনি, ভোজ্য তেল ও মুরগির বাজার নিয়ে সিন্ডিকেটকারী ব্যবসায়ীদের যথাযথ শাস্তি না হওয়ায় নতুন করে আলু-পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই ক্ষেত্রে বলব, দেশে আইন রয়েছে। কিন্তু আইনের সঠিক প্রয়োগ নেই। যার ফলে ব্যবসায়ীরা যে যখন ইচ্ছে তাদের মতো খাদ্যপণ্য স্টক করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের হাত থেকে দেশের সাধারণ মানুষকে রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তর দাম নির্ধারণ করে দেয় না। এর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাজারে হঠাৎ করে পেঁয়াজ ও আদার দাম বেড়েছে। এসব পণ্যের ক্ষেত্রে সরাসরি কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে। কৃষকের স্বার্থে বর্তমানে আইপি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যেন কৃষক তাদের ন্যায্য মূল্য পায়। যতদিন পর্যন্ত আইপি বন্ধ থাকবে ততদিন পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে বাজারে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক কোনো বিষয় চোখে পড়লে আমরা ব্যবস্থা নেব।