নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভোট চুরির প্রকল্প হিসেবে সরকার পুলিশ ও স্থানীয় সরকার প্রশাসনে রদবদল শুরু করেছে। এ প্রকল্প ভাঙতে হলে দরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ ক্যাথরিন কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে বেলা ৩টার দিকে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপি নেতারা।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে নতুন করে কিছু তো বলার নাই। আমরা একটি কথা বারবার বলছি যে বাংলাদেশের ওপর সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশ যেগুলো আছে, বিশ্বের যত গণতন্ত্রকামী সংগঠন আছে, যারাই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করে, আইনের শাসনে-জীবনের নিরাপত্তায় বিশ্বাস করে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে- সবারই এখানে একটা কনসার্ন আছে।’
তিনি বলেন, ‘এই জন্য নিরপেক্ষ সরকার ব্যতীত বাংলাদেশে একটা নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এই ভোট চুরি করার প্রকল্প ভাঙার একমাত্র উপায় হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠনের মাধ্যমে। এই আলোচনাগুলো সব জায়গায় যেমন চলছে, আমাদের আলোচনাতেও উঠে এসেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে একটা অনির্বাচিত সরকার থাকার কারণে আজকে কিন্তু মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, চরম দুর্নীতি- এ বিষয়গুলো উঠছে। মূল উঠে আসছে একটা বিষয় তা হলো- অনির্বিাচিত, অবৈধ, দখরদারত্বের সরকার। সুতরাং এটা পরিবর্তনের একটা মাত্র উপায় হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশদারত্বমূলক নির্বাচন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের যে রকম প্রত্যাশা, তাদেরও (ব্রিটিশ হাইকমিশনার) একই প্রত্যাশা যে বাংলাদেশ একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন- জনগণ তাদের সংসদ সদস্য নির্বাচন করবে, তাদের সরকার নির্বাচন করবে। এ কনসার্ন সবার আছে এবং ব্রিটিশ দূতের তো সব সময় ছিল। আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার ডেমোক্রেসি ফলো করি। সুতরাং তাদের সব সময় (কনসার্ন) ছিল। এই বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আর যে প্রেক্ষাপটটা, আমরা যদি খালি ইদানীংকালের প্রেক্ষাপটটা বাংলাদেশে চলছে, যদি গত এক সপ্তাহের প্রেক্ষাপট যদি লক্ষ্য করি- কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, কতজন আহত হয়েছে, কতজন গ্রেপ্তার হয়েছে, কত মামলা হয়েছে, তারপর কোথায় কোথায় ডিসি পোস্টিং হচ্ছে, কোথায় কোথায় পুলিশ অফিসার পোস্টিং হচ্ছে, কোথায় ইউএনও পোস্টিং হচ্ছে- এই যে নির্বাচনে চুরি করার যে প্রকল্প এটা যে গত এক সপ্তাহে এত কিছু করার পরও, এই নির্বাচনে চুরি করার প্রকল্প কিন্তু অব্যাহত আছে। এটাতে তো সবার দৃষ্টি আছে। এখান থেকে দৃষ্টি এড়ানোর কোনো সুযোগ নাই।’
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই ভোট চুরির প্রকল্প প্রতিদিন ভীষণভাবে কাজ করছে। বিচারব্যবস্থায়ও, দেখেন না বিএনপির নেতাকর্মীদের বিচারকে ত্বরান্বিত করার জন্য অভ্যন্তরীণ যে আলোচনাগুলো চলছে, সোস্যাল মিডিয়াতে আসছে এগুলো তো বিরাট ধরনের কনসার্নের বিষয় আছে। সুতরাং কোথায় নির্বাচন ছয় মাস পরে, কিন্তু ভোট চুরির প্রকল্প একটিভভাবে চলছে। গত এক এক সপ্তাহে চলেছে, এক মাসে চলেছে, ছয় মাসে চলছে, এখনো চলছে। এটি অব্যাহত আছে।’
এ সময় বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
আমাদেরকাগজ/এইচএম