রাজনীতি ৯ অক্টোবর, ২০১৯ ০৩:৩৭

মাদক রেখে ‘গণপিটুনির নাটক’ সাজাতে চেয়েছিল ছাত্রলীগ

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বিকে হত্যার পর তার কক্ষে মাদক রেখে গণপিটুনির নাটক সাজাতে চেয়েছিলেন ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই নাটক সাজাতে রাতে পুলিশ ডাকলেও তাদের গাড়ি হল চত্বরে ঢুকতে দেয়নি ছাত্রলীগের সেই কর্মীরা।

তবে আবরারের সহপাঠীদের পাহারা এবং পরবর্তীতে শিক্ষকদের তৎপরতার কারণে তাদের সেই অপচেষ্টা সফল হয়নি। ৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার বুয়েটের শেরেবাংলা হলের শিক্ষার্থী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। বাংলা ট্রিবিউন’র এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।

জানা গেছে, আবরারের মোবাইল ও ল্যাপটপে শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু না পাওয়ার পর তার কক্ষে মাদক রেখে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করেছিল বুয়েট ছাত্রলীগের এসব নেতা-কর্মী। তবে সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী বিষয়টি আবরারের কক্ষের অন্য সহপাঠীদের জানিয়ে দেয়। বিষয়টি জেনে ওই নেতাদের চাতুরি ঠেকাতে ১০১১ নম্বর কক্ষটির দরজা জানালা সব বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা।

ওই কক্ষের পাশের একটি কক্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তারা (ছাত্রলীগ) চেয়েছিল ১০১১ কক্ষে মাদক রাখবে। আমরা পরে কক্ষটি পাহারা দেই। সবাই ঘুম থেকে ওঠার পর ছাত্রলীগ ধীরে ধীরে গা ঢাকা দেয়। তারপরও আবরারের কক্ষ আমরা পাহারা দেই।’

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমাদের (পুলিশকে) খবর দিয়েও পরবর্তীতে তারা আর হলে ঢুকতে দেয়নি। তারা বলছিল, শিবির ধরা পড়েছে, তাকে নিয়ে যান। কিন্তু, থানা পুলিশ গেলে তাদের হলে ঢুকতে দেয়নি। তারা লাশ অনেকক্ষণ আটকে রেখেছিল। পরে শিক্ষকরা আসার পর আমরা লাশ ঢামেক হাসপাতালে পাঠাতে সক্ষম হই।’

প্রসঙ্গত, ৫ অক্টোবর, শনিবার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে নিজের মত প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন আবরার ফাহাদ। সেই স্ট্যাটাসের কারণে ৭ অক্টোবর, সোমবার তাকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েটের একই হলের বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। পরে ভোরে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির মাঝের করিডোর থেকে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এই ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থাকতেন।