শিক্ষা ১১ অক্টোবর, ২০১৯ ০৮:৫৯

ছেলে অনিককে নিয়ে যা বললেন বাবা

ডেস্ক রিপোর্ট ।। 

অনেক কষ্ট করে ছেলেকে প্রতি মাসে টাকা পাঠিয়েছেন। এখন শুনছেন ছেলে খুন করেছে। ছেলে অনিক সরকারের এই খবরে হতাশ তার বাবা আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘আমরা জানি অনিক সেখানে পড়ালেখা করছে। যখন জানতে পারি এক ছাত্রকে খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে তাকে আটক করেছে পুলিশ, তখন অবাক হয়ে যাই। ভাবতে পারছি নানা আমার ছেলে কাউকে খুন করতে পারে।’

‘ছেলে যদি অপরাধী হয় তবে প্রচলিত আইনে তার বিচার হোক। এক ফুলে ১০টা কুঁড়ি হলে ১০টাই ফল হয় না।’ বলেন বাবা।

আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অন্যতম ছাত্রলীগ নেতা অনিক সরকার বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী পিটিয়ে হত্যার তিন দিন পর বৃহস্পতিবার বুকভরা কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলেন অনিকের বাবা। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অনিক ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বরইকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা অনিকের বাবা একজন ব্যবসায়ী। তার দুই ছেলের মধ্যে অনিক ছোট।

জানা গেছে, অনিক সরকার ওরফে অপু ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিল। সে মোহনপুর কেজি স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। অষ্টম শ্রেণিতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায় সে। ২০১৩ সালে একই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাস করে। পরে ঢাকা নটর ডেম কলেজে ভর্তি হয় এবং জিপিএ ৫ পেয়ে ২০১৫ সালে এইচএসসি পাস করে। একই সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হয়। বর্তমানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।

আনোয়ার হোসেন বলেন, ছেলেকে পাঠিয়েছি পড়ালেখা করতে। অনেক কষ্ট করে তাকে টাকা পাঠিয়েছি মাসের পর মাস। কিন্তু কে জানত সে এ ধরনের অমানবিক কাজে জড়িয়ে যাবে। সব বাবা-মা চায় তার সন্তান ভালোভাবে পড়ালেখা করে পাস করে আসুক, বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করুক। কিন্তু অনিক এমন হত্যার সঙ্গে জড়িয়ে যাবে ভাবতে পারছি না।

তিনি বলেন, আমি চাই কারও সন্তান যেন এমন না হয়। আইন সবার জন্য সমান। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার ছেলে অপরাধী হলে প্রচলিত আইনে তার যে সাজা হবে আমি মেনে নেব। আমি চাই আমার ছেলের বিচার হোক। আমি আশা করব অনিকের মতো আর কেউ যেন ভুল পথে না যায়।

আনোয়ার হোসেন বলেন, অনিক রাজশাহীতে থাকা অবস্থায় কোনো রাজনীতি করত না। কারও সাথে তেমন মিশতও না। কী করে সে রাজনীতিতে প্রবেশ করল তা জানি না। আমরা জানি অনিক সেখানে পড়ালেখা করছে। যখন জানতে পারলাম অনিক এক ছাত্রকে হত্যা করেছে। সেই দায়ে তাকে আটক করেছে পুলিশ। তখন অবাক হয়ে গেছিলাম। ভাবতে পারিনি আমার ছেলে কাউকে খুন করতে পারে।

তিনি বলেন, সবাই বলছে আমার পরিবার নাকি বিএনপি-জামায়াতের পরিবার। আমি সবাইকে বলতে চাই, ছেলের অপরাধে বাবা বা তার পরিবারের বিচার করবেন না। আমরা আওয়ামী লীগের পরিবারের মানুষ, আজীবন আওয়ামী লীগেই থাকতে চাই।