লাইফ স্টাইল ১২ অক্টোবর, ২০১৯ ১১:১১

শরীরের যে সকল উপকার করে আটিয়া কলা

ডেস্ক রিপোর্ট

সাদা আমাশয়, রক্ত আমাশয় ও পাতলা পায়খানার মহা ওষুধ হিসেবে আগের দিনে গ্রামের আটিয়া কলা খাওয়ার পরামর্শ দিতে অভিজ্ঞরা। আবার অনেকেই আটিয়া কলা ফালি করে করে কেটে পানিতে ভিজে সকাল বেলা খালি পেটে শরবত হিসেবে খাওয়ার চল ছিল,  এতে প্রসাবের জ্বালা পোড়া সেরে যেত।

সকালের নাস্তায় আটিয়া কলা দই, চিড়া ও মুড়ি কিংবা ছাতুর সঙ্গে আটিয়া কলা ভীষণ জনপ্রিয় ছিল।  এই কলা বরাবরই পথ্য হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা দেশীয় খাবারের সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে আটিয়া কলা বা বিচি কলা। এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের কলা।

ধরন অনুযায়ী দেশি আটিয়া কলা মোটা, গোল, খাটো ও ভেতরে বিচি হয়। এ কলায় অনেক ভিটামিন, আয়রন ও প্রচুর প্রোটিন রয়েছে। গ্রামে এখনও প্রচলিত আছে আটিয়া কলা ও চিড়াভিজা খেলে পেটের সমস্যা সেরে যায়।

নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের কলা ব্যবসায়ী আলী হোসেন (৬৫) বলেন, দেশি আটিয়া কলা এক সময়ের জনপ্রিয় খাবার ছিল। আটিয়া কলা ও চালের গুড়া সকালে খেলে সারাদিন আর ক্ষুধা লাগে না।  

জেলা শহরের শাখামাচা বাজারের কলা ব্যবসায়ী আবুল বাসার বলেন, দেশি আটিয়া কলা এখন খুবই কম পাওয়া যায়। হঠাৎ কিছু কিছু গ্রামে আটিয়া কলা পাওয়া যায়। আগেকার মানুষজন এ জাতীয় কলার চাষ করতো। এখন এ কলা চাষ একেবারেই উঠে গেছে। তবে এখনও মানুষ বা গরুর আমাশয় ও পাতলা পায়খানা হলে পথ্য (ওষুধ) হিসেবে বাজারে খুঁজে নেয়। এই কলায় আয়রন বেশি থাকায় বাজারে এর দামও বেশি। প্রচুর বিক্রিও হয়।

নীলফামারী জেলা শহরের কালিবাড়ী মোড়ের শক্তি ঔষধালয় ঢাকা, নীলফামারী শাখার সত্তাধিকারী (মালিক) শ্রীদাম দাস বলেন, আটিয়া কলা মল রোধক একটি পথ্য এটি খেলে শরীরের শক্তি সঞ্চয়সহ নানা রোগের উপকার করে থাকে। বিশেষ করে আমাশয় ও পাতলা পায়খানা রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু শফি মাহমুদ বলেন, একটি বড় মাপের কলা খেলে ১০০ ক্যালোরির বেশি শক্তি পাওয়া যায়। কলাতে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য শর্করা। শর্করা জাতীয় খাবার পরিপাকতন্ত্রকে হজম করতে সাহায্য করে। তিনি বলেন, আটিয়া কলা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন ও স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ নিশ্চিত করে। এ কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে।

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবুল কাশেম আযাদ জানান, এই জাতীয় কলার বিচি বেশি হওয়ার কারণে কেউ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে না। তবে গ্রামে অযত্নে আর অবহেলায় বাড়ীর আশেপাশে অথবা বাঁশঝাড়ে এ কলার দুয়েকটি গাছ দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে এ জাতীয় কলা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। এই কলা একটি খুব উপকারী কলা। যা বিভিন্ন রোগে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা পথ্য হিসেবে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।