শিক্ষা ২০ অক্টোবর, ২০১৯ ০৯:২৯

ছয় মাসেও মেলেনি ডাকসু ভিপির পাসপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আলোচিত নেতা নুরুল হক নুর ডাকসু ভিপি হিসেবে বিদেশে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শংকা তৈরি হয়েছে । দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে ভিপি পদে নির্বাচিত নুরুল হক নুর গত ২৩ এপ্রিল ইমার্জেন্সি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন।

নিয়মানুসারে সেই পাসপোর্ট ২ মে তার পাওয়ার কথা। কিন্তু পাসপোর্টের জন্য বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ঘুরছেন গত চার মাস ধরে। তারপরও তার পাসপোর্ট মিলছে না।

অবশেষে বাধ্য হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর আদালতের শরণাপন্ন হন। গত ১ আগস্ট বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

আজ রোববার বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর ডিভিশন বেঞ্চ আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এ রিটের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভিপি নুরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ বলেন, আমরা অনুরোধ করেছিলাম দ্রুত শুনানির জন্য আদেশ দেয়ার। কিন্তু এখন তা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত। পরে সরকার সময় চাইবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, রাষ্ট্রপক্ষ আরও তিন মাস সময় চাইলে তো ভিপি নুরের মেয়াদ থাকাকালীন আর পাসপোর্টই পাবেন না। কারণ, আগামী বছরের মার্চেই নুরুল হক নুরের ডাকসু ভিপির মেয়াদ শেষ হবে।

রবিবার দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিক হিসেবে আমার মৌলিক অধিকার। রাজনৈতিক নেতারা অনেক মামলার আসামি হলেও তারা পাসপোর্ট পেয়ে থাকে। অথচ আমি ডাকসু ভিপি হিসেবে পাচ্ছি না।

ডাকসু ভিপি বলেন, সরকার নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে আমাকে পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে না। আমি যেহেতু নানা ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলি, তাই তারা আমাকে নানাভাবে হয়রানি করছে।

তিনি বলেন, ‘আমাকে পাসপোর্ট না দেয়া সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।আমি একাধিকবার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে একাধিকবার নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কিছুদিন ধরে আমি অসুস্থতা বোধ করছি। তাই বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করানোও প্রয়োজন। কিন্তু পাসপোর্টের অভাবে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না।’

ভিপি নুর জানান, গত জুলাইয়ে নেপালের ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটিতে একটি সেমিনারে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ ছিল তার। জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট পেতে ব্যাংকে নির্ধারিত ফিসহ এপ্রিলে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে ফরম জমা দেন তিনি।

ডাকসু ভিপি নুর জানান, তিনি ধারণা করেছিলেন সাতদিন পরই পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবেন। কিন্তু এক মাসেও তা না পেয়ে তিনি পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজি তাকে জানান, তার বিরুদ্ধে মামলা থাকায় পাসপোর্ট দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। মামলা রয়েছে এমন অনেক রাজনৈতিক নেতারা তাহলে কীভাবে পাসপোর্ট পান নুর তা জানতে চাইলে ডিজি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

নুর আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এমনটা হওয়ার কারণ সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব। সরকারের উচ্চপর্যায়ের কনসার্নে আমার পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে না। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। ডাকসু ভিপি হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সেমিনারে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ আসে। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকলে সেগুলোতে অংশ নেব কীভাবে?