রাজনীতি ১৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০২:৩৭

'বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার ক্ষতি করেছেন জিয়া'

ডেস্ক রিপোর্ট ।। 

সাবেক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের যে ক্ষতি করেছেন তা স্পষ্ট করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। তার মতো ক্ষতি আর কেউ করেনি।

সম্প্রতি এশিয়াটিক সোসাইটিতে এক বক্তৃতায় ইতিহাসের এই অধ্যাপক বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি নষ্ট করার জন্য সংবিধানকে কয়েকবার সংশোধন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের জাতীয় বীর ঘোষণা শুধু নয়, নানা রকম সুবিধা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ যে কোনো আদর্শ নয়, তা প্রমাণের জন্য জিয়া বঙ্গবন্ধু কর্তৃক নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোকে মুক্ত করেন। রাজাকারদেরও প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী বানিয়েছিলেন।

বিএনপির কারান্তরীণ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও একই ধরনের ঘৃণ্য কাজ করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে মুনতাসীর মামুন বলেন, খালেদা জিয়াও একই ধারা বজায় রেখেছিলেন। খালেদা-নিজামী মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র বদলিয়েছিলেন। সরকার প্রধান হয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলায় পৃষ্ঠপোষকতা করেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলবাদকে বিকশিত করতে সহায়তা। তিনিই বোধ হয় বিশ্বে একমাত্র সরকার প্রধান, যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধী ও স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের ক্ষমতায় এনেছিলেন। শুধু তাই নয়, সে সময় মানবতা বিরোধী অপরাধী মন্ত্রী মুজাহিদ বলেছিলেন, যুদ্ধাপরাধী বলে কিছু নেই।

জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ বিরোধী কাজের ফিরিস্তি দিয়ে মুনতাসীর মামুন বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় বসে বাঙালিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তিনটি কাজ করেছিলেন। এক- সংবিধানে মৌলিক নীতি বিনষ্ট করা। দুই- স্বাধীনতাবিরোধীদের জেল থেকে মুক্ত করে ক্ষমতায় আনেন এবং ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের যে ধারা ছিল সংবিধানে তা বাতিল করেন। সংবিধান পরিবর্তন ছিল স্মৃতির সঙ্গে দূরত্ব স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ।

জিয়াউর রহমানের হীন-কৌশল সম্পর্কে মুনতাসীর মামুন বলেন, যেখানে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন ও হানাদাররা আত্মসমর্পণ করেছিল (রেসকোর্স ময়দান), সে স্থানটিতে গড়ে তুললেন শিশুপার্ক। মুক্তিযুদ্ধের গানের স্মৃতির বদলে এলো শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’। এটি জিয়ার থিম সং-এ পরিণত হল।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা এই অধ্যাপক বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলাদেশে পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। যদি সময়ের মাপকাঠিতে বিচার করি তাহলে এটি পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা। পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা হয়েও সেটি কিভাবে চোখের আড়ালে চলে গেল? এর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র জড়িত।