জাতীয় ২১ নভেম্বর, ২০১৯ ১২:১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে ৪৬ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া গেছে

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

একজন নয়, দুজন নয় একে একে খুঁজে পাওয়া গেল ৪৬ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী। সেটাও একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় চলমান ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এসব ভুয়া পরীক্ষার্থী শনাক্ত করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার বালিয়াডাঙ্গী কালমেঘ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসব পরীক্ষার্থীদের শনাক্ত করেছেন ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্র সচিব ও কালমেঘ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হযরত আলী। 

কেন্দ্র সচিব বলেন, পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকে সন্দেহ হয়েছিল আমার। সঠিক প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অনুসন্ধানে সত্যতা পেয়ে গত বুধবার ০১ জন ও আজ বৃহস্পতিবার আরও ৩৬ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে। গতকালের ১ জন শনাক্ত করা মাদ্রাসাটির সকল পরীক্ষার্থীই ভুয়া। বাকি ৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কেউ আজকে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসেনি। 

ভুয়া পরীক্ষার্থীরা হলেন, লালাপুর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ১০ জন, ছোট পলাশবাড়ী বলিদ্বারা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ৮ জন, রায়পুর সাজাদ আলী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ১১ জন, আরাজি সরলিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ৬ জন এবং লালাপুর সফিজ উদ্দীন স্বতন্ত্র মাদ্রাসার ১১ জন। 

জানা যায়, চলমান জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের ৬০০ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধ্য করায় মাদ্রাসা প্রধানরা। ভুয়া পরীক্ষার্থীদের বাড়ী ঠাকুরগাঁও সদর ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। এরা চলতি বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা দিয়েছেন। 

গত বুধবার ভুয়া পরীক্ষার্থী শনাক্ত হওয়া লালাপুর গ্রামের ওই শিক্ষার্থী জানায়, লালাপুর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও তার ছেলে ৬শ' টাকার লোভ দেখিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে বলে। আমাদের কোন সমস্যা হবে না, বাকি সবকিছু তারা ম্যানেজ করেছেন বলে জানায় ওই শিক্ষার্থী। তবে তার অভিভাবক জানান, তার ছেলের জেএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আবার অন্য মাদ্রাসার হয়ে পরীক্ষা দিয়েছে এ বিষয়ে ধরা পরার পর তিনি জেনেছেন। 

এমনচিত্র শনাক্ত হওয়া ৫টি মাদ্রাসার। সকলেই প্রতি বছর ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে ফলাফল দেখিয়ে বেতন ভাতা উত্তোলন করে খাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।  

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল আলম সুমন জানান, বৃহস্পতিবার পরীক্ষা কেন্দ্রে শনাক্ত হওয়া পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকের নিকট মুচলেকা নিয়ে ৩৬ জন পরীক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছেন। গতকাল ১ জনকে একই ভাবে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ৫ মাদ্রাসা প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে জানা যায়, সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ভুয়া পরীক্ষার্থী শনাক্ত হওয়া কেন্দ্রে ৬২৭ জন পরীর্ক্ষাথী চলমান ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে প্রাথমিকের ৫৫০ জন এবং মাদ্রাসার ৭৭ জন পরীক্ষার্থী। মাদ্রাসার ৭৭ জনের মধ্যে ৪৬ জনই ভুয়া।