খেলাধুলা ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০১:৩৩

বার্নাব্যুতে পিএসজির দুই মিনিটের ঝড়ে এলোমেলো রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্ক।। 

গত রাতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে কাইলিয়ান এমবাপে ও পাবলো সারাবিয়ার শেষবেলার গোলে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে পিএসজি। ম্যাচের শেষদিকে প্যারিস সাঁ সাঁ’র মাত্র দুই মিনিটের ঝড়ে এলোমেলো জিনেদিন জিদানের দল। ৭৯ মিনিট পর্যন্ত ২ গোলে এগিয়ে থাকার পরও ঘরের মাঠে ড্র করতে হয় লস ব্লাঙ্কোসদের। ড্র’র ফলে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে থেকেই নকআউটে গেল ফরাসি জায়ান্টরা। নকআউট নিশ্চিত রিয়ালেরও।

পিএসজির বিপক্ষেই ৩-০ গোলের হার দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি মৌসুম শুরু করেছিল রিয়াল। এদিন অবশ্য সেই ম্যাচের শোধ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল। করিম বেনজেমার জোড়া গোলের সঙ্গে ভিএআরে তার আরেকটি গোল বাতিল না হলে শুরুটা তেমনই ছিল স্বাগতিকদের।

চলতি সপ্তাহে যে এমবাপের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেছিলেন জিদান, সেই এমবাপের ব্যবধান কমানো গোলের পর রিয়ালেরই সাবেক মিডফিল্ডার সারাবিয়া পিএসজির হয়ে সমতাসূচক গোল করলে জয়বঞ্চিত থাকতে হয় স্প্যানিশ জায়ান্টদের।

পিএসজির কাছে রিয়াল শুধু শীর্ষস্থানই হারায়নি, ইনজুরির কারণে হারিয়েছে এডেন হ্যাজার্ডকেও। ম্যাচের ২১ মিনিট বাকি থাকতে মাঠ ছাড়তে হয় বেলজিয়াম তারকাকে।

সাড়ে ৭৫ হাজার দর্শকের সামনে ম্যাচের ১৭ মিনিটের সময় দলকে এগিয়ে দেন করিম বেনজেমা। ফেদেরিকো ভালভার্দে ও দানি কারভাহাল বল দেয়া-নেয়ার পর শেষ পাস দেন ইসকোকে। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের জোরাল শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে, ফিরতি বল দারুণ ফিনিশিংয়ে ঠিকানায় পাঠান বেনজেমা।

পিএসজির মাঠে প্রতিপক্ষের হানায় যেমন ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়াকে, তেমনি এদিন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ব্যস্ত থাকতে হয় কেইলর নাভাসকে। তার সাবেক সতীর্থ টনি ক্রুজ, কারভাহালদের একের পর এক শট আটকে দেন কোস্টারিকান কিপার।

চলতি মৌসুমে পিএসজির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথমবার মাঠে নামেন নেইমার। তেমন একটা আলো ছড়াতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে নেমেছিলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার।

নেইমার-এমবাপে-কাভানিরা যখন গোল শোধে ব্যস্ত, তারমধ্যেই দ্বিতীয়বার লিড নেয় রিয়াল। ৭৯ মিনিটে আবারও গোলদাতা বেনজেমা। এই গোলের পর মনে হচ্ছিল রিয়ালের জয়ই নিশ্চিত হয়ে গেল।

তখনো নাটকের চমকপ্রদ সমাপ্তি বাকি। ৯ মিনিট বাকি থাকতে দুই গোলের দেনার একটি শোধ করেন এমবাপে। সারাবিয়ার ক্রস আটকাতে ব্যর্থ হন রাফায়েল ভারানে ও কোর্তোয়া। ফাঁকা পোস্টে বল জড়াতে সমস্যা হয়নি এমবাপের।

ম্যাচের ৮১-৮৩, এই দুই মিনিটের ঝড়টাই আটকাতে পারল না রিয়াল। যার খেসারত দিতে হল পয়েন্ট হারিয়ে। ৮৩ মিনিটে বক্সের ডানপ্রান্তের দূরহ কোণ থেকে বল জালে পাঠান সারাবিয়া। ম্যাচ শেষে রিয়ালের জন্য ঘাতক হয়ে থাকলেন এক সময়ের ঘরের ছেলেই।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটি দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন গ্যারেথ বেল। পরে সুযোগ হাতছাড়া করেন রদ্রিগো এবং ভারানেও। শেষদিকে আবার গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া লাল কার্ড দেখা থেকে বেঁচে গেলে আগের ক্ষতি পুষিয়ে যায় রিয়ালের। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের সঙ্গে সংঘর্ষের পর তাৎক্ষণিক কোর্তোয়াকে লাল কার্ড দেন রেফারি। পরে ভিএআরের সাহায্য নিলে রক্ষা পান বেলজিয়াম গোলকিপার।

পাঁচ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষস্থানে থেকে নকআউটে গেল পিএসজি। সমানসংখ্যক ম্যাচে রিয়ালের সংগ্রহ ৮ পয়েন্ট। একই সমান ম্যাচ খেলে গ্রুপের অন্য দুই দল ক্লাব ব্রুগে ৩ ও গ্যালাতাসারের ভাণ্ডারে মাত্র ২ পয়েন্ট। মঙ্গলবার রাতে ১-১ গোলে ড্র করে চলতি আসর থেকে বিদায় নেয় দুই ক্লাবই।