আন্তর্জাতিক ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৫:৩৮

ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় তরুণীকে থানায় নিয়ে নির্যাতন

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

ভারতের তেলেঙ্গানার তরুণী পশু-চিকিৎসককে ধর্ষণ ও পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে নিরব প্রতিবাদে নেমেছিলেন দিল্লির ২০ বছর বয়সী তরুণী অনু দুবে। গতকাল ৩০ নভেম্বর, শনিবার দেশটির জাতীয় সংসদের ২ আর ৩ নম্বর ফটকের উল্টোদিকের ফুটপাথে একাই বসেছিলেন তিনি। সাথে একটা প্ল্যাকার্ডে লাল রঙে লেখা— ‘কেন? আমি আমার নিজের ভারতে নিরাপদ নই!’

এমন প্রতিবাদ সহ্য করতে পারেনি পুলিশ। জনা তিনেক পুলিশ তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে তুলে সাদা জিপসিতে। এর আগে তাকে যন্তর-মন্তরে চলে যেতে বলে পুলিশ। কিন্তু তিনি তা না মানায় তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায়। সেখানে অনুকে রীতিমতো মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায় বলে জানায় আনন্দবাজার।

এমনকি ‘সংসদের ধারেকাছে আর প্রতিবাদ করব না‘— এই মুচলেকা দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেতে হয় অনু দুবেকে। পুলিশের বক্তব্য, ওই জায়গাটিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ।

দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল অভিযোগ করেছেন, থানায় একটি খাটের ওপর অনুকে ফেলে তার ওপরে চড়ে বসেন তিনজন নারী পুলিশ।

স্বাতী বলেন, ‘মেয়েটির শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন আমি দেখেছি। দিল্লি পুলিশকে নোটিশ দিচ্ছি। ওই তিন পুলিশকর্মীকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করতে হবে।’

থানা থেকে বের হওয়ার পর অনুর হাতে ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে বলেও জানান স্বাতী। তিনি জানান, অনুকে খামচে দেওয়া হয়েছে। হেড কনস্টেবল কুলদীপ, মঞ্জু এবং আরো এক পুলিশকর্মী তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।

এসময় সাংবাদিকরা এগিয়ে এসে তার বিষয়ে জানতে চাইলে অনু বলে ওঠেন, ‘আপনারা আমার কথা জিজ্ঞাসা করছেন কেন? আমি শুধু আমার জন্য আজ এখানে আসিনি। ওই মেয়েটা মরে গেল। কাল আমি পুড়ে মরতে চাই না।’

এসব বলতে বলতে বারবার গলা ধরে আসছিলো অনুর। রাগ-দুঃখ-ঘেন্না মেশানো কান্না ঠেলে, ভেজা চোখে বললেন, ‘কখনো এ ভাবে পথে নামিনি। কিন্তু আর পারলাম না। কাল সারা রাত ঘুমোইনি। আমি ক্লান্ত। নাগরিক হিসেবে আমারো তো অধিকার আছে মেয়ে হয়ে একটা ভয়মুক্ত জীবন বাঁচার।’