আন্তর্জাতিক ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০৭:০৮

তেল উৎপাদন বাড়াতে চায় সৌদি

তেলের বিশ্ববাজার জীবাশ্ম জ্বালানির দিকে ঝুঁকে পড়ছে। তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর ভাবনায় এ বিষয়টি নাড়া দিয়েছে আর তাই কমে যেতে পারে খনিজ তেলের চাহিদা। এমতাবস্থায় অপরিশোধিত তেলের বাজার একেবারে ফুরিয়ে যাওয়ার আগে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত সৌদি আরব।

দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত তেল উৎপাদনকারী সংস্থা আরামকো অপরিশোধিত তেল উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে। জানা গেছে, তেলের দৈনিক উৎপাদন ১২ মিলিয়ন ব্যারেল থেকে ১৩ মিলিয়নে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে দেশটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে পরিবেশবান্ধব তেলের চাহিদা বাড়ার আগেই নিজেদের তেল রপ্তানি বাড়িয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিতে চাইছে তারা।

পশ্চিমা দেশগুলোতে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা কমলে নতুন বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার পরিকল্পনাও করছে দেশটি। এজন্য ভারত ও চীনের মতো দেশগুলোতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে চাইছে তারা।

তবে এখনও খনিজ তেলের বিশ্ব বাজার নিয়ে আশাবাদী আরামকো। রয়টার্সকে দেয়া এক বিবৃতিতে আরামকোর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বিশ্ব বাজারে তেলের চাহিদা বাড়বে। খুব দ্রুতই এ বাজারের পতন ঘটার আশঙ্কা নেই।

সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহামেদ বিন সালমানের নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অর্থ প্রয়োজন। যুবরাজ সালমান ২০৩০ সালের মধ্যে তেল রপ্তানির উপর দেশটির নির্ভরতা কমিয়ে আনতে চান। আর এ জন্য তার প্রয়োজন অর্থ। সে অর্থের অন্যতম উৎস তেল রপ্তানি।

এদিকে বাজারে পরিবেশবান্ধব তেলের চাহিদা বাড়ার কারণে আরামকোকেও সে বিষয়ে ভাবতে হচ্ছে। আরামকোর তেল তার প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব। আরামকোর প্রতি ব্যারেল তেলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের তীব্রতা ১০ দশমিক এক কেজি যা তার প্রতিযোগীদের চেয়ে অনেক কম।

আর তাই অধিক পরিমাণে তেল রপ্তানি করে উপার্জিত টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগের কথা ভাবছেন সালমান, বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স।

তেল গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনার্জি অ্যাসপেক্টস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা অমৃতা সেন মনে করেন, যে দেশগুলো পরিবেশবান্ধব উপায়ে তেল উৎপাদন করতে পারবে তারা বাজারে টিকে থাকবে। আর এক্ষেত্রে সৌদি প্রতিষ্ঠান আরামকো ভালো অবস্থানে থাকবে।

প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো পরিবেশবান্ধব তেল উৎপাদনে মনোযোগী হওয়া আর উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা। পাশাপাশি তেল উৎপাদন বাড়ানোর দিকেও আমাদের নজর রয়েছে যেন প্রতিযোগীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা টিকে থাকতে পারি।

সূত্র – রয়টার্স