আন্তর্জাতিক ১৩ অক্টোবর, ২০২০ ০৯:০৪

যুদ্ধবিরতি না মেনে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সংঘর্ষ চলমান

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী হামলা পাল্টা-হামলা অব্যাহত রেখেছে। এতে উভয় পক্ষের সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য হতাহত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার খবর দিয়েছে রুশ সংবাদসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স।

নাগোরনো-কারাবাখের জাতিগত আর্মেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, আড়ারবাইজানের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের আরও ১৭ সৈন্য নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর নাগোরনো-কারাবাখে দুই প্রতিবেশির সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আর্মেনিয়ার ৫৪২ সৈন্য প্রাণ হারালেন। অন্যদিকে, আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীরও বেশ কিছু সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাকু।

১৯৯০ দশকে দেশ দুটির মাঝে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং বাস্ত্যুচুত হন ১০ লাখের বেশি। ১৯৯৪ সালে দুই দেশ অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে পৌঁছালেও সময়ে সময়ে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বর্তমানে এই অঞ্চলে যে অবস্থা চলছে তা সত্যি ভয়াভহ।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও দুদিন পার না হতেই আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী। তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উভয় দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।

আর্মেনীয়-আজারি সংঘাতের অবসানে আজারবাইজানের অন্যতম মিত্র তুরস্ককে আরও জোরাল ভূমিকা রাখতে বার বার আহ্বান জানিয়ে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে চলমান সংঘাতে নজর রাখছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আজারবাইজানের গ্যাস এবং তেল ক্ষেত্রগুলো সংঘাতস্থলের কাছে হওয়ায় আঞ্চলিক দুই পরাশক্তি তুরস্ক এবং রাশিয়ারও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে নাগোরনো-কারাবাখের লড়াই।

নিজেদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক এই সংঘাতের অবসানে মস্কো এবং তুরস্কের প্রতিও চাপ বাড়ছে। দুই সপ্তাহের লড়াইয়ে নিহতদের দেহ সরিয়ে নিতে এবং বন্দি বিনিময়ের লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। কিন্তু সংঘাত অব্যাহত থাকায় সেই লক্ষ্য এখনও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

নাগোরনো-কারাবাখ একটি বিবাদপূর্ণ ছিটমহল। যেখানে আর্মেনীয় খিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর বসবাস। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মুসলিম অধ্যুষিত আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নাগোরনো-কারাবাখ। আর এতে সমর্থন জানিয়ে আজারবাইজানের বৃহৎ ভূখণ্ড দখলে নিয়ে ছিটমহলটির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে আর্মেনিয়া।

 সূত্র - ইন্টারফ্যাক্স