সারাদেশ ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ১২:১৪

প্রেমিককে দিয়ে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করান স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের মিঠাপুকুরে স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় প্রেমিককে দিয়ে চা বিক্রেতা স্বামী গুলসানকে কুপিয়ে হত্যা করান সেলিনা বেগম।

আজ বুধবার রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে তিনি ও প্রেমিক মিলে স্বামী হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন

মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, নিহতের স্ত্রী সেলিনাকে বুধবার দুপুরে চীফ জুডিশিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে এলাহির খাস কামরায় তোলা হয়। সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সেলিনা আদালতকে জানান, প্রতিবেশী হারুন নামে এক যুবকের সঙ্গে ৩ বছর ধরে পরকীয়া চলে আসছে তার। বিষয়টি প্রকাশ হলে স্বামী গুলসানের সঙ্গে প্রায় সময় ঝগড়া হতো। এমনকি সেলিনাকে মারধোরও করতেন গুলসান। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি নেমে আসে। এক পর্যায়ে প্রেমিক হারুন সেলিনাকে নির্দেশ দেয়- গুলসানকে মেরে ফেলো। এপরপর আমরা বিয়ে করব। কিন্তু, তা নিজে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সেই কাজটি করার জন্য হারুনকেই দায়িত্ব দেন সেলিনা। এই পরিকল্পনা মোতাবেক সোমবার রাতে আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে মাথায় হেলমেট পরে হারুন গুলসানের পথরোধ করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরী কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

পুলিশ ও এলাকবাসী সূত্রে জানা যায়, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের ধারে জায়গীর বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরে চায়ের দোকানে চা বিক্রি করে আসছেন গুলসান মিয়া (৪০)। তিনি উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের আবদুল হকের ছেলে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাসস্ট্যান্ডের পাশে দুর্গাপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন

সোমবার রাত দেড়টার দিকে জায়গীর বাসস্ট্যান্ড থেকে চা দোকান বন্ধ করে দুর্গাপুরে ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন গুলসান। ব্র্যাক অফিসের কাছাকাছি পৌঁছলে মাথায় হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিরা পথরোধ করে গুলসানের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুলসানকে মৃত ঘোষণা করেন

মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সেলিনা ও তার প্রেমিক হারুনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হারুনকে গ্রেপ্তারে জোরালো অভিযান চলছে