কৃষি ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ ১০:৩৪

পানের বরজ করে স্বাবলম্বী ২৫ পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বারাইপাড়া গ্রামে পানের বরজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন প্রায় পঁচিশটি কৃষক পরিবার। পানের বরজই তাদের একমাত্র আয়ের উৎস। বাপ-দাদার পেশা না ছেড়ে আঁকড়ে ধরে থাকার কারণেই আজ জীবন যুদ্ধে জয়ী এ পরিবারগুলো। পান বিক্রির টাকা দিয়ে সচ্ছলভাবে চলছে তাদের সংসার, চলছে ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা, ভরণপোষন।

প্রাচীনকাল থেকে এ গ্রামের বাসিন্দারা পানের বরজে পান চাষ করতো। এ অঞ্চলের লোকেরা পানের বরজকে বর বলে। আর যারা বর চাষ করে তাদেরকে বলা হয় বারাই। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ পান চাষে নিয়োজিত থাকায় গ্রামটির নাম হয়েছে বারাইপাড়া।

ওই গ্রামের পান চাষি মনতোষ চন্দ্র (৪২) জানান, আগের বরজটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চার বছর আগে ২৪ শতক জমিতে পানের বরজ দিয়েছেন তিনি। বন্যার সময় কিছুটা ক্ষতি হলেও বর্তমানে বরজের অবস্থা ভা লো। ফলনও হয়েছে সন্তোষজনক। বর্তমানে তিনি পাইকারদের কাছে প্রতি ১’শ পান (বড়) ১৪০ টাকা, মাঝারী প্রতি ১’শ পান ১১০ টাকা এবং ছোট ১’শ পান ৭০ টাকা দরে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ১০০০ টাকার পান বিক্রি করছেন।

তিনি আরও জানান, পান চাষে পরিশ্রম হলেও চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় লাভ অনেক বেশি। তাছাড়া সঠিক পরিচর্যা করলে পানের বরজ থেকে সারা বছরই পয়সা আসে। ফলে স্বচ্ছলভাবে সংসার চালানো যায়। একবার বরজ তৈরী করলে ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত পান চাষ করা যায়।

একই গ্রামে ২৮ শতক জমিতে পানের বরজ দিয়েছেন পরেশ চন্দ্র (৪৫)। তিনি বলেন, বাপ-দাদারাও পান চাষ করতেন। তাদের পেশা ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার এ বরজের বয়স ১১ বছর হয়েছে। আশা করছি আরও ৩/৪ বছর থাকবে। বরজের পান বিক্রি করে সংসার ভালই চলছে। আমিসহ এ গ্রামের প্রায় পঁচিশ- ত্রিশটি পরিবার পানের বরজ দিয়ে স্বচ্ছল ভাবে চলছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রশিদ জানান, ভাঙ্গামোড় এলাকার বেশকিছু কৃষক বংশানুক্রমে ঐতিহ্যবাহী বরজে পান চাষ করেছেন। উপজেলায় প্রায় পাঁচ হেক্টর জমিতে বরজের মাধ্যমে পান চাষ চলছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষে মাঠ পর্যায়ে পান চাষিদের মাঝে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।