নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে করোনার ভ্যাকসিন (অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন) বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) ২৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে একথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন আনার সব ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন, শুধু আমাদের অপেক্ষা, ভ্যাকসিনটা তৈরি হওয়া ও অনুমোদন পাওয়া।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, এর পেছনে প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবদান রয়েছে। তাদের কারণে করোনা চিকিৎসায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে সফল হয়েছি, আমরা নিয়ন্ত্রণেও রাখতে পেরেছি। পৃথিবীর কাছে তা একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যখন এখানে করোনা শুরু হয় তখন এ বিষয়ে কারো জানা ছিল না। কীভাবে এটা আক্রান্ত হয়, কী এটার চিকিৎসা এ বিষয়ে কারো জানা ছিল না। আপনারা জানেন প্রথমে আমাদের এখানে ভেন্টিলেটর নিয়ে তুলকালাম অবস্থা। টেলিভিশনে ডেইলি এটা নিয়ে আলোচনা। পরে দেখা গেল, ভেন্টিলেটর থেকে বেশি প্রয়োজন হলো হাইফ্লো নেজাল কেনোলা। অক্সিজেনের বেশি দরকার। কাজেই প্রথমে চিকিৎসা পদ্ধতিও বিশ্বে ভালো ইস্টাবলিস্ট ছিল না। আমাদের মেডিসিন সোসাইটি ও অন্যান্য সোসাইটি তারা চেষ্টা করে একটা মেডিকেল প্রটোকল তৈরি করেছে। তারা সহযোগিতা করে দ্রুত ট্রিটমেন্ট প্রটোকল তৈরি করেছেন। ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন। তারপরে সারা বাংলাদেশে ভালো করে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আমাদের তখন হাসপাতাল গুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল না। দেশে কোনো পিপিই ছিল না।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন বিশ্বে কোথাও ছিল না। একটি মাত্র ল্যাব নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। কিন্তু আজকে তার পরিবর্তন হয়েছে। আজকে আপনারা জানেন ১১০টি ল্যাবে টেস্ট করা হচ্ছে। প্রতিটি হাসপাতালে আলাদা বেড করা হয়েছে। আমাদের ডাক্তাররা একই হাসপাতালে দুই ধরনের চিকিৎসা দিচ্ছেন। আপনারাতো জানেন একটি হার্টের বা ক্যান্সারের রোগীকে চিকিৎসা দিতে কেউ ভয় পায় না, কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু করোনার চিকিৎসা দিতে আলাদা ব্যবস্থা নিতে হয়। আমার মা আক্রান্ত হয়ে একমাস হাসপাতালে ছিলেন, কিন্তু আমি যেতে পারিনি। আমার বোন আক্রান্ত হয়ে ২০ দিন হাসপাতালে ছিল কিন্তু আমরা যেতে পারিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি আমেরিকার দিকে তাকান, ইউরোপের দিকে তাকান, ভারতের দিকে তাকান। আমেরিকাতে ৩ লাখ লোক মারা গেছে। ভারতে প্রায় পৌনে দুই লাখ লোক মারা গেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো আছে। সে ভালো থাকার জন্য আমরা সকলে একযোগে কাজ করছি। আমাদের টেলিমেডিসিন খুব ভালো কাজ করেছে। ডাক্তাররা সারাক্ষণ এই টেলি মেডিসিনে অনেক সেবা দিয়েছে। ৮০ পারসেন্ট রোগীই বাসা থেকে সেবা নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, শুধু পিসিআর টেস্ট হচ্ছে না, এন্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমরা ম্যান পাওয়ারও বাড়িয়েছি। যে ম্যানপাওয়ার নিতে এক বছর লাগে, ১৫ দিনে দুই হাজার ডাক্তার ও ৪ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি।
স্বাচিপের ওই অনুষ্ঠানের বাংলাদেশে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চিকিৎসকরা, আওয়ামী লীগের জনস্বাস্থ্য উপ কমিটির নেতারাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের চিকৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।