বিনোদন ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০৮:৪২

বাংলা সিনেমার খোলামেলা নায়িকা মুনমুন এখন সার্কাস কর্মী

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

বাংলাদেশে খোলামেলা নায়িকা হিসাবে নাম নিতে গেলে দুইজন নায়িকার নাম একসাথে তা হচ্ছে মুনমুন ও ময়ুরী। মুনমুন নিজে এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, “ময়ূরীর সাথে আমার নামটা জুড়ে দিয়ে একইসাথে দুজনকে অশ্লীল নায়িকা হিসেবে কথা বলেন সকলে। আমার দুঃখের জায়গা হলো এটা যে আমাকে অশ্লীল নায়িকা হিসেবে অভিযুক্ত করেন। যার কারণে আমাকে ফিল্ম ছেড়ে দিতে হয়েছে, পরিবার ছেড়ে দিতে হয়েছে। দ্বিতীয়বার আমি সিনেমায় ফিরতে চেয়েছি আমাকে ফিরতে দেওয়া হয়নি। আমি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করতে চেয়েছি আমাকে কেউ নেয়নি। বাধ্য হয়ে আমি সার্কাসে যোগ দিয়েছি। এখন সার্কাস আমার প্রধান পেশা, ভালোবাসা।“

নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়িকা মুনমুন। যাকে সমালোচকরা অনেক কথা বললেও তার অভিনীত সিনেমা আয় করতে সক্ষম ছিল। সিনেমায় তার অভিনয়, পোশাক নিয়ে অনেক সমালোচনা হলেও নিজে এর জবাবে বলেন, ‘আমাদেরকে ডিরেক্টর প্রোডিউসাররা জোর করতো সংক্ষিপ্ত পোশাক পরানোর জন্য। আমরা তো বাসা থেকে কাপড় নিয়ে যাই না। ওরা যেটা পরতে বলতো সেটাই পরতে হতো। এক সময়ে এভাবে না চলতে পেরে চলে আসি। ২০০৩ সাল আমার চলচ্চিত্রের শেষ বছর। এরপর আমি বিয়ে করে ইংল্যান্ড চলে যাই। যে দৃশ্যে অভিনয় করিনি সে দৃশ্যেও আমার মাথা কেটে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেবে দেখলাম, সম্মান থাকতেই কেটে পড়া উচিত।’

এক সময়ের দর্শকের সুপার ডুপার নায়িকা নিজের জনপ্রিয় বুঝতে পেরে বলেন, ‘আই ওয়াজ অ্যা সুপারস্টার, আমি কেন অশ্লীল চলচ্চিত্রে অভিনয় করবো? আমি যখন চলচ্চিত্রে অভিনয় করতাম তখন ছিলাম আনবিটেবল। অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আমি বেশিরভাগ ছবিতে লেডি অ্যাকশন চরিত্রে কাজ করেছি তখন আমাকে পেছনে ফেলার কেউ নেই। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে কয়েকজন সাংবাদিক অশ্লীল নায়িকা তকমা জুড়ে দিয়েছে। কিন্তু কেউ প্রমাণ দেখাতে পারবে না। আমাদের ভালো ছবিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হতো কাটপিস।


 
প্রসঙ্গত, চিত্রনায়িকা মুনমুন ১৯৯৬ সালে ও লেভেলে পড়াকালীন অধ্যয়নকালীন মৌমাছি সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই ছবিতে অভিষিক্ত হন। মুনমুনের সাথে এ সিনেমায় মূল নায়িকা ছিলেন ছিলেন শাবনূর। ‘টারজান কন্যা’ নামের একটি ছবির মাধ্যমে প্রধান নায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হন। এরপর রানি কেন ডাকাত, মৃত্যুর মুখে, টারজান কন্যাসহ অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি করেছেন।

চিত্রনায়িকা মুনমুন সার্কাসে অভিনয় নিয়ে বলেন, আমি সার্কাসকে ভালোবাসি। আগামী ২৯ আগস্ট থেকে তোলপাড় ছবির শুটিং শুরু হবে। সেটার শুটিংয়ে অংশ নেবো। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে দুই রাজকন্যা, পদ্মার প্রেম ও রাগী। রাগী ছবিটি নিয়ে আমার এক্সপেক্টেশন বেশি। যদি ভালো হয় তাহলে চলচ্চিত্রে কন্টিনিউ করবো। আর চলচ্চিত্র নিয়ে আমার খুব বেশি মাথা ব্যাথা নেই। আমি আগে সেই শুরুতে সাইনিং মানি নিতাম ২-৩ লাখ টাকা। এখন তো পেমেন্টেরই ঠিক ঠিকানা নেই। তাই সার্কাস কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনাই আমার কাছে মুখ্য।

উল্লেখ্য, সালমান শাহ’র মৃ’ত্যুর পরে এদেশের চলচ্চিত্রে অশ্লীলতা ঢুকে পরে। মান্না-শাকিব খান চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মান্না মারা যাওয়ার পর সেটা ভয়াবহ রূপ নেয়।

পারিবারীক ভাবে রাজধানীর উত্তরাতে সালাম ও সালমান নামের দুই সন্তানকে নিয়ে সুখের বসবাস মুনমুনের। সাংসারিক জীবনে নিজেকে সুখী উল্লেখ করে মুনমুন কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি অনেক হ্যাপি। আমার দুই সন্তান, মা আর স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছি। বড় ছেলে যশ রাজধানীর একটি স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড সেভেনে পড়েন, ছোট ছেলে শিবরাম কেজি টু-তে পড়েন। মুনমুনের স্বামী মীর মোশাররফ হোসেন ব্যবসার সাথে যুক্ত।