আইন ও আদালত ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০২:৪৬

এসআইসহ চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ৩

ডেস্ক রিপোর্ট।।

যশোরের শার্শা উপজেলার গোড়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খায়রুলসহ সোর্সের বিরুদ্ধে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সুপার ক্ষতিগ্রস্ত মহিলার অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তের পর  ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। 

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন—শার্শার চটকাপোতা গ্রামের কামরুল ইসলাম, লক্ষণপুর গ্রামের ওমর আলী (৫০) ও আবদুল লতিফ (৫০)। অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম খায়রুল আলম। তিনি শার্শা থানার গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে ছিলেন। খায়রুলের বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায়। তাঁকে এখনো আটক করা হয়নি।

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমার স্বামী একসময় চোরাচালানিদের পণ্য বহন করতেন। কিন্তু এখন কৃষিকাজ করেন। ৯  দিন আগে (২৫ আগস্ট) শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুল আমাদের বাড়ি থেকে স্বামীকে ধরে নিয়ে যান। এসআই খায়রুল আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তাকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে তাকে চালান দেওয়া হয়। আমি থানা পুলিশকেও বিষয়টি জানিয়েছি- কিন্তু তারা আমার কথা শোনেননি।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘ঘটনার ৯দিন পর (২৫ আগস্ট) কালরাতে (২ সেপ্টেম্বর, রাত আড়াইটার দিকে) এসআই খায়রুল, সোর্স কামারুল এবং গ্রামের আরও তিন-চার চারজন এসে আমাকে ডাকাডাকি করে। অতরাতে দরজা খুলতে না চাইলে তারা মামলার ব্যাপারে কথা বলবেন বলে জানায়। তখন আমি দরজা খুলে দেই। দারোগা খায়রুল ফের ৫০ হাজার টাকা দাবি করে বলেন- তাহলে ৫৪ ধারায় মামলা করে দেবেন। টাকা না দেওয়া নিয়ে দারোগার সঙ্গে আমার ঝগড়াও হয়।’

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে দু’জন আমাকে ঘরের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করে চলে যায়।’
ওই নারী আরও বলেন, ‘তাঁরা (এস আই খায়রুলসহ অন্যরা) চলে যাওয়ার পর ঘটনাটি প্রতিবেশীদের জানাই। প্রতিবেশীরা আমাকে মামলার পরামর্শ দেন। মামলা করতে হলে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করাতে হবে। এ কারণে আমি থানায় না গিয়ে সোজা যশোর জেনারেল হাসপাতালে যাই।’

যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলছেন, মঙ্গলবার বিকেলে ওই নারীর সামনে এসআই খায়রুলসহ চারজনকে হাজির করা হয়। তিনি খায়রুল ছাড়া অপর তিনজনকে চিনতে পেরেছেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আরিফ আহম্মেদ  বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই নারী জরুরি বিভাগে আসেন। অভিযোগ শুনে তাঁকে জানাই যে, এ ধরনের পরীক্ষা পুলিশের মাধ্যমে না এলে করা যায় না। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিনুজ্জামান ওই নারীকে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যান।’

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মশিউর রহমান বলেন, ওই নারী তিনজনের নাম উল্লেখসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করেছেন।

পুলিশ সুপার মঈনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পুলিশ সদস্য বলে তদন্তে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

এদিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আরিফ আহম্মেদ জানিয়েছেন যে, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন আসার পর বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।