জাতীয় ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০৮:২৭

৫ কূটনীতিককে ভাসানচরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিয়ানমারের শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর করার বিষয়ে উদ্বেগপ্রকাশকারী পাঁচ কূটনীতিককে রোহিঙ্গাদের নতুন আবাস দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

গতকাল বুধবার বিকালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কানাডার পাঁচ কূটনীতিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের ভাসানচর দেখতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি।

সাক্ষাৎকারে এই কূটনীতিকরা কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নোয়াখালীর ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানান।

তাদের চিন্তা ও শঙ্কার বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদেরকে ভাসানচরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু।

তিনি আরও বলেন, মন্ত্রী কূটনীতিকদের জানিয়েছেন যে, তিনি নিজেই ভাসানচর গিয়েছেন এবং সেখানে থানা ও অন্যান্য সুবিধাদির কথা তুলে ধরেছেন।

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের নতুন ঠিকানা নোয়াখালীর ভাসানচর। ফাইল ছবিরোহিঙ্গাদের নতুন ঠিকানা নোয়াখালীর ভাসানচর। ফাইল ছবি

সম্প্রতি চার দফায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নতুন ঠিকানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে পরিবেশ দেখে এই শরণার্থীরাও তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে।

অপু বলেন, কূটনীতিকরা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরের বিষয়ে বারবার জানতে চেয়েছেন এবং তাদেরকে বলা হয়েছে যে, কক্সবাজার একটি পর্যটন এলাকা। সুতরাং পর্যটন এলাকাও সরকার রক্ষা করতে চায়। আর যারা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে চেয়েছেন সেসব রোহিঙ্গাদের পাঠানো হয়েছে।

মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর জাতীয় কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

১৭ সদস্যের ওই কমিটির আহ্বায়ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কমিটির প্রধান হিসেবেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এই পাঁচ কূটনীতিক।

বাংলাদেশ বরাবরই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কূটনীতিকরা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানান অপু।

তিনি বলেন, পাঁচ কূটনীতিক রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর ছাড়াও মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়েও প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ করেছেন।

রাখাইনে সেনা অভিযানে নিপীড়নের মুখে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। দুদিন আগে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা নিয়েছে সেনাবাহিনী।

অপু বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনীতিকদের মিয়ানমারের বিষয়ে বলেছেন যে, এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়।