ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার উপায় খুঁজছেন ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতারা।
জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূত কিয়াও মোয়ে তুন বলেন, ‘এর মধ্যে আইসিসি একটি উপায়। আমরা আইসিসি’র সদস্য রাষ্ট্র নই, কিন্তু মামলাটি আইসিসিতে নিতে আমাদের উপায় ও পথ খুঁজতে হবে।’
অন্যদিকে, জান্তা সরকারের মার্শাল ল’ উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। দেশটির বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। এই বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে আরও অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মিয়ানমারে জান্তা সরকারের মার্শাল ল’ উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে অভ্যুত্থানবিরোধীরা। শুক্রবারও দেশটির শহরে শহরে রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ। তবে এই বিক্ষোভে ফের গুলি চালিয়েছে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। এতে আরও অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছে।
বিক্ষোভের মধ্যে বিবিসির এক সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিবিসির বার্মিজ বিভাগের রিপোর্টার অং থুরা রাজধানী নেপিদোতে কোর্ট ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে যখন কাজ করছিলেন, তখন সেখান থেকে তাকে সাধারণ পোশাকধারী লোকজন তুলে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্রই গুলি করা হচ্ছে। কিন্তু মার্শাল ল’ও মানছে না বার্মিজরা। সামরিক আইন ও গ্রেফতারের ভয় উপেক্ষা করেই প্রতিদিনই রাস্তায় নামছে। অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, 'ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছে।'
এদিকে, সেনা সরকারের পক্ষে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিদেশি মিশনে কর্মরত মিয়ানমারের আরও চার কূটনীতিক। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সেনা কর্তৃপক্ষের অব্যাহত সহিংসতার ব্যবহারের উল্লেখ করে শুক্রবার তারা এই সিদ্ধান্ত জানান।
মিয়ানমারে শুরু থেকেই দেশটির জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে সেনা অভ্যুত্থান। অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারের সাধারণ জনতা রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার জনগণ কাজে ইস্তফা দিয়ে প্রতিদিন বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
জান্তা সরকার এসব বিক্ষোভের প্রতি প্রথমদিকে সহনশীলতা দেখালেও কিছুদিনের মধ্যে চরম সহিংস দমনপীড়ন শুরু করে সেনা-পুলিশ। এর মধ্যেই গত সপ্তাহে প্রধান দুই শহর ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয়ের কয়েকটি শহরে মার্শাল ল’ জারি করা হয়। এরপর দমনপীড়নের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্ষোভকারী বলেন, 'নিরাপত্তা বাহিনী ব্যারিকেড সরানোর চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তখনই গুলি চালানো হয়। অংবান শহরে শেষকৃত্যের সেবা দেওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশের গুলিতে আট বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।'
এর মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলেই। অন্যজনকে কাছের কালাও শহরের হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে। নতুন ৮ জন দিয়ে মোট মৃত্যু দাঁড়িয়েছে ২৩২ জন। সর্বশেষ এই হত্যাযজ্ঞ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি মিয়ানমারের সেনা সরকারের মুখপাত্র।