রাজনীতি ৪ অক্টোবর, ২০২২ ০৫:২৯

দুর্গাপূজায় মন্দিরে-মণ্ডপে সতর্ক, পাহারা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ

স্টাফ রিপোর্টার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হতে পারে বলে এমন আশঙ্কায় প্রথমদিন থেকে দুর্গাপূজায় মন্দিরে-মণ্ডপে মণ্ডপে সতর্ক অবস্থা পাহারা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর লালবাগ-রামপুরা, মতিঝিল-পল্টন,শাহাবাগ,যাত্রাবাড়ি-ডেমরা,কদমতলী-শ্যামপুর,ওয়ারী-সুত্রাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সর্তক অবস্থা চেয়ার নিয়ে বসে সর্তক থাকতে দেখা দেখা গেছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, ডেমরার নিশিপাড়া-বামৈল ও আশপাশের এলাকায় ৬৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান নেতাকর্মীদের নিয়ে পূজা পরিদর্শন করেন। এ সময় পূজার মণ্ডপে আগত অতিথিদের মুখে মাস্ক পরিয়ে দেন। ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সিফাত সাদেকীন চপল কোনাপাড়া-ধার্মিকপাড়া ও চিশতিয়া রোডের তিনটি পূজা মণ্ডপে নেতাকর্মীদের নিয়ে বসে আড্ডা দেন। অপরিচিত কেউ পূজা মণ্ডপে আসলে এবং সন্দেহ হলে তার পরিচয় নিশ্চিত হচ্ছেন। এদিন ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপে আর্থিক সহযোগীতা করেন সাবেক এই ছাত্রনেতা।

যাত্রাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না সণ্ধ্যায় কাজলারপাড় দুটি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় ৪৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু, ৬২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ, আওয়ামী লীগের নেতা শফিউদ্দিন শফিক ও বোরহান উদ্দিন বেপারীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নাশকতা-বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আবুল হোসেন ৬টি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সর্তক থাকার নির্দেশনা দেন। রাজধানীর কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৫৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিকের নির্দেশনায় পোস্তখোলা শ্মশানঘাট,পালপাড়া ও জুরাইন মন্দিরের পূজা মণ্ডপে সার্বোক্ষনিক সতর্ক অবস্থায় পাহারা দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

এদিন প্রতিটি পূজা মণ্ডপে নগদ আর্থিক সহায়তা দেন আকাশ কুমার ভৌমিক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক কোষাধ্যক্ষ ফজলুল হক ফজলু, শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক দফতর সম্পাদক ওমর ফারুক, কদমতলী থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: জিহাদ মাতাব্বরসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। একইসাথে মহানগরের সবগুলো থানা এলাকায় দলীয় নেতারা সতর্ক অবস্থায় পাহারা দিচ্ছেন।

এরআগে ৩০ সেপ্টেম্বর পূজা মণ্ডপগুলোতে সতর্কভাবে পাহারা দেয়ার নির্দেশ দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি প্রকাশ্যে যতটা নিষ্ক্রিয় ভেতরে ভেতরে ততটা সক্রিয় আছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগের বছরের বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার সরকার সতর্ক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মন্দিরে মন্দিরে, মণ্ডপে মণ্ডপে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্কভাবে পাহারা দিতে হবে।

এদিকে বৃষ্টি-বাদলা উপেক্ষা করে আনন্দমুখর পরিবেশে সারাদেশের মতো রাজধানীতেও উদযাপিত হচ্ছে সনাতনী হিন্দুধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। ইতিমধ্যে পূজামণ্ডপগুলো নানা বয়সী মানুষের সমাগমে সরগরম হয়ে উঠেছে। তাতে যোগ দিচ্ছেন সব ধর্মের মানুষ। তাদের মধ্যে আছেন রাজনৈতিক নেতারাও। তারা মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরছেন, পূজারিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।

মুসলমানদের বড় দুটি উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো দুর্গাপূজার সময় তারা প্রতি বছর কুশল বিনিময় করেন। তবে আগামী আগামী বছরের শেষ সময়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবার মণ্ডপে তাদের ব্যস্ততা তুলনামূলক বেশি। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঢুঁ মারছেন মণ্ডপে। তাদের অনেকে দুঃস্থ হিন্দুদেদের মধ্যে কাপড়, নগদ অর্থ বিতরণ করছেন। গতকাল সোমবার  অষ্টমী পূজা শেষে আজ মঙ্গলবার নবমীর মধ্যদিয়ে আগামীকাল বুধবার মহাদশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে দেবী বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের এ ধর্মীয় উৎসব।

আমদের কাগজ// টিএ