সারাদেশ ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ০৬:০৭

ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলন করলেন মৃতব্যক্তি!

পরেশ চন্দ্র ছবি: সংগৃহীত

পরেশ চন্দ্র ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাট প্রতিনিধি: ১৯৯৪ সালে মারা গিয়েছেন পরেশ চন্দ্র। তবে সোনালী ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত ১০ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর ১১ বছর পর  লোন নিয়েছেন মর্মে নোটিশে উল্লেখ করে সোনালী ব্যাংকের জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল শাখা।

ক্ষেতলাল উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের পাঁচুইল গ্রামের মৃত কৈলাশ চন্দ্রের ছেলে পরেশ চন্দ্র। সম্প্রতি সোনালী ব্যাংক থেকে পরেশ চন্দ্রের নামে ১০ হাজার টাকা এমসিডি ঋণ পরিশোধের জন্য এক নোটিশ পাঠানো হয়। ডাকযোগে পাঠানো ব্যাংকের রেজিস্ট্রি করা চিঠিটি মৃত পরেশ চন্দ্রের বড় ছেলে নরেশ চন্দ্র গ্রহণ করেন। চিঠি খুলে তিনি তাঁর বাবার নামে ব্যাংকের ১০ হাজার টাকার এমসিডি ঋণ পরিশোধের নোটিশটি দেখতে পান। নরেশ চন্দ্র বলেন, ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর তাঁর বাবা ঋণ গ্রহণ করেছেন। অথচ তাঁর বাবা পরেশ চন্দ্র ২৮ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন মারা গেছেন।

কিন্তু সোনালী ব্যাংকের ক্ষেতলাল শাখা বলছে, ঋণ গ্রহণের তারিখ ঠিক আছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের দাবি, ঋণের নথিতে পরেশ চন্দ্রের নাগরিকত্ব সনদ, ছবি, জমির কাগজপত্র ও স্বাক্ষর—সবই আছে।

জানা যায়,ব্যাংকে রক্ষিত ৩২৮ নম্বর এমসিডি ঋণের নথিপত্রে পরেশ চন্দ্রের নাম রয়েছে। ছবি-নাগরিকত্ব সনদ, জমির কাগজ দিয়ে পরেশ চন্দ্র ঋণ ডকুমেন্টে স্বাক্ষর দিয়ে ১০ হাজার ঋণ গ্রহণ করেছেন বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যাংকের পাঠানো নোটিশের সঙ্গে তথ্যের মিল পাওয়া গেছে। তবে আলমপুর ইউপিতে ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যু রেজিস্ট্রার খোলা হয়। ওই রেজিস্ট্রারের ৩৮ নম্বর পাতার ৪৩ নম্বর সিরিয়ালে পাঁচুইল গ্রামের পরেশ চন্দ্রের নাম রয়েছে। তাঁর মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন। তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে বুকের ব্যথার কথা উল্লেখ রয়েছে। আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২০২১ সালের ৯ মার্চ নরেশ চন্দ্রকে তাঁর বাবার মৃত্যুসনদ দেওয়া হয়েছে। ওই সনদেও মৃত্যুর তারিখ ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন উল্লেখ করা হয়েছে।

সোনালী ব্যাংক ক্ষেতলাল শাখার ব্যবস্থাপক সিনিয়র প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব বলেন, ব্যাংকের ঋণ নথিতে দেখা গেছে, পরেশ চন্দ্র ২০০৫ সালে কাগজপত্র ও স্বাক্ষর দিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। ঋণটি পরিশোধ হয়নি। এখন ঋণটি শ্রেণিকৃত হয়েছে। এ কারণে ঋণের আসল টাকা পরিশোধের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মৃত ব্যক্তি কীভাবে ঋণ পেলেন জানতে চাইলে আহসান হাবিব বলেন, ‘তখন আমি এখানে শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলাম না। এ কারণে সেটি আমার জানার কথাও নয়। তবে একসময় এ শাখায় কৃষি, এমসিডি ও ছাগল ঋণে অনিয়ম হয়েছিল বলে শুনেছি।’

আমাদের কাগজ//জেডআই