রাজনীতি ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:০৬

বিএনপির এমপিদের পদত্যাগের বিষয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল

রংপুর প্রতিনিধি: যে কোনো সময় সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা সোজা কথা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এটা আমাদের স্পষ্ট কথা। আমাদের দলের সংসদ সদস্যরাও যেকোনো সময় সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন হবে।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রংপুরের আয়োজিত বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বক্তব্যের শুরুতে আঞ্চলিক ভাষায় দলের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, কেমন আছেন বাহে? ভালো আছেন তো? আমরা রংপুর ডিভিশনের ছাওয়া। আমরা ভালো থাকিমো। অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নকে জয় করে আমরা বাহের দেশের মানুষ ভালো থাকমো ইনশাআল্লাহ।  

তিনি বলেন, আজকের এই সমাবেশের দিকে সমগ্র বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, এই সমাবেশের দিকে সারা বিশ্বের অনেকগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজর রয়েছে। এখানে আলজাজিরা, বিবিসির সাংবাদিকরা উপস্থিত রয়েছেন। আপনারা (দলের নেতাকর্মীরা) তিন দিন ধরে অমানবিক পরিশ্রম করেছেন, অমানবিক অবস্থায় থেকেছেন। গুদাম ঘরে, রাস্তাঘাট-ফুটপাতে থেকেছেন। কেউ নৌকায় করে এসেছেন, কেউ সাইকেল চালিয়ে এসেছেন। আমি আপনাদের কষ্ট দেখেছি।

ফখরুল বলেন, সরকার নাকি বিরোধী দলকে ভয় পায় না। সরকার নাকি জনগণকে ভয় পায় না। ভয় যদি না পায় তাহলে দুই দিন আগে গাড়ি বন্ধ করে দিলো কেন? খুলনাতে গাড়ি বন্ধ করে, ট্রলার উল্টে দিয়ে মানুষকে চাপাতি-রামদা দিয়ে মেরেছে কেন? কেন আমাদের নেতাদের গুলি করে মারো?

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সমাবেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সমাবেশ। একটা মানুষ, একটা দল গত ১৫ বছর ধরে আমাদের দমন-পীড়ন করছে। সমস্ত দেশটাকে তারা কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়েছে। এখন বাংলাদেশকে খাওয়ার পাঁয়তারা করছে।

তিনি বলেন, এই সমাবেশের লক্ষ্য একটাই, হাসিনা কবে যাবে? এই সরকার কবে যাবে? দাবি একটাই, এই সরকারের পদত্যাগ। গত ১৫ বছরে এই আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের যত অর্জন ছিল, যত স্বপ্ন ছিল সমস্ত কিছুকে ধ্বংস করে দিয়েছে, নষ্ট করে দিয়েছে। যেদিকে তাকাবেন খালি চুরি চুরি আর চুরি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ সব ভাতাতে ভাগ নেয় আওয়ামী লীগ। রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট তৈরি করতেও তারা এখন টাকা চুরি করে। এমনকি গরিবের আশ্রয়ণ প্রকল্পেও চুরি করছে। তারা সর্বক্ষেত্রে লুট করছে। সব খেয়ে ফেলছে। আর কিছু বাকি রাখেনি। সরকার এখন ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’র মতো সব খেয়ে ফেলছে।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার আমাদের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করেছে। তিনি অসুস্থ হওয়ার কারণে বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন। এখন তাকে আর দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা করা হয়েছে। আমাদের ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করেছে এই সরকার। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। আলেম-ওলামাদেরও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। এদের কি আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যায়?

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যারা দেশকে ধ্বংস করছে, মানুষকে ধ্বংস করছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করছে তাদেরকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না।

আমাদেরকাগজ/এইচএম