নিজস্ব প্রতিবেদক: পরকীয়া, অপহরণ ও ঘুষ গ্রহণসহ নানা অনিয়মের দায়ে চার পুলিশ কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেনের স্বাক্ষরিত পৃথক ৪টি প্রজ্ঞাপনে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ সদরদপ্তর।
শাস্তি পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. সালাউদ্দিন শিকদার, গাজীপুরের ডিসি মো. মিজানুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী মো. ফজলুল করিম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তার অধীনস্থ এসআই মো. সাফায়েত হোসেনের স্ত্রীসহ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, রাতে মদ্যপান করে বাড়িতে ফিরে আসা, অভিযোগকারীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং যৌতুকের দাবিতে চারটি বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। মামলার তদন্তে সন্দেহাতীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনকে 'তিরস্কার' করা হয়েছে।
২০২১ সালে যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাদা পোশাকে ৩ পুলিশ সদস্যের সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর মেলামেশার কারণে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি হয়। এ ঘটনার সূত্র ধরে সেখানে যান বর্তমানে ডিএমপির ডিসি মো. সালাউদ্দিন শিকদার। সেখানে তিনি যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুকে আটক করে পরবর্তীতে তাকে ডিবি কার্যালয়ে ১৫-১৬ ঘণ্টা আটক রেখে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পরে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি চাকরির বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ' এর দায়ে তাকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড প্রদান করা হয়।
ডিএমপির ডিসি মো. মিজানুর রহমানের (তৎকালীন দিনাজপুরে কর্মরত) বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে 'বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত' জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার স্থগিত বেতন বৃদ্ধি ভবিষ্যতে বেতন থেকে সমন্বয় করা হবে না বলেও জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পুলিশ সুপার কাজী মো. ফজলুল করিম ২০০৮ সালে মহাখালী টার্মিনাল ফাঁড়ির সামনের মোড় থেকে রিপন নামে একজনকে ধরে গাড়িতে তুলে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে চোখ বেঁধে ফেলেন এবং তার কাছে থাকা ৮৬ হাজার সৌদি রিয়াল, মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে তার লিখিত জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে উভয়পক্ষের বক্তব্য, প্রাসঙ্গিক দলিলপত্রাদি এবং অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রা বিবেচনায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাই তাকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আমাদেরকাগজ/এইচএম