জাতীয় ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ১১:০৪

৮০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি পেলেন দুদকের সেই শরীফ

ছবিঃ ইন্টারনেট

ছবিঃ ইন্টারনেট

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ নানান উত্থান-পতনের পর অবশেষে চাকরিতে যোগ দিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে চাকরি খোয়ানো উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) শরীফ উদ্দিন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে চাকরিচ্যুত মো. শরীফ উদ্দিন ৮০ হাজার টাকা বেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করে বুধবার (১৬ নভেম্বর) শরীফ উদ্দিন জানান, ‘একটি ভেটেরিনারি মেডিসিন কোম্পানির হেডঅফ টেকনিক্যাল সার্ভিস কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। 

প্রায় ৩৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন জানিয়ে শরীফ বলেন, যেহেতু ভেটেরিনারিতে পড়েছেন, সে কারণে প্রাণীদের চিকিৎসাসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

শরীফ উদ্দিন ২০১১ সালে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটেরিনারি মেডিসিন নিয়ে পড়ালেখা করেন। এর আগে ২০১৪ সালে দুদকে যোগ দেওয়ার আগে তিনি চার বছর ধরে বিভিন্ন ফিড কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক ছিলেন শরীফ উদ্দিন। দীর্ঘ সময় তিনি চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন। তিনি কক্সবাজারে ৭২টি প্রকল্পে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, কিছু রোহিঙ্গার এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশ কিছু দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি মামলা করেন।

গত বছরের ১৬ জুন শরীফ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরিচ্যুতির কোনো কারণ উল্লেখ করেনি কর্তৃপক্ষ। তিনি ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন করেন। তবে তার আবেদন কমিশনের কাছে বিবেচিত হয়নি।

চাকরি হারিয়ে পরিবার নিয়ে সংকটে পড়েন শরীফ উদ্দিন। দেড় মাস ধরে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের পাশে বড় ভাইয়ের একটি কনফেকশনারি দোকানে চাকরি করছিলেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে শরীফ বলেন, ‘আমি আবার দুদকে ফিরে যেতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আবার যাতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়।’

শরীফ বলেন, কক্সবাজারে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে দুর্নীতি, রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ বিভিন্ন দুর্নীতির মামলা দায়ের ও তদন্ত করে দুর্নীতিবাজদের রোষানলে পড়েন তিনি। অন্যায়ভাবে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। শরীফকে চাকরিতে পুনর্বহাল চেয়ে এক আইনজীবী হাইকোর্ট রিট করেন। সেটির এখনো শুনানি হয়নি।

উল্লেখ্য,গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (সার্ভেন্টস) সার্ভিস রুলস ২০০৮-এর ৫৪(২) ধারায় শরীফকে বরখাস্ত করে দুদক। এই ধারা অনুযায়ী, দুদক ৯০ দিনের নোটিশ জারি করে বা নগদ ৯০ দিনের বেতন দিয়ে যে কোনো কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করতে পারে। তবে ভুক্তভোগীর আত্মরক্ষার অধিকার আছে।

শরীফ দুদকে চাকরি হারানোর পর কিছু দিন চট্টগ্রামে ভাইয়ের দোকানে কাজ করেন। এই বিষয়ে প্রতিবেদক প্রকাশের পর শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। যারা তাকে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছেন, তাদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান তিনি।

 

আমাদের কাগজ/ এম টি