স্পোর্টস ডেস্ক: মেসির সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান স্টারের সম্পর্ক বন্ধুর চেয়েও বেশি। অতীতে বার্সেলোনায় একসঙ্গে খেলেছেন তারা। এখন পিএসজিতে খেলছেন তারা। নেইমার শুধু মেসির সঙ্গেই নন, ফরাসি সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গেও খেলেন প্যারিসে। বিশ্বকাপ যুদ্ধের আগে নেইমার জানালেন মেসি-এমবাপের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা খেলার অভিজ্ঞতা তার কাছে ঠিক কেমন। বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের সব পরিকল্পনা জানিয়েছেন টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে
প্রশ্ন :এবার কাতারে কোন দলগুলো ফেভারিট হিসেবে রাখবেন?
নেইমার :দেখুন, বিশ্বকাপ সব সময়ই বিস্ময়ের। তবে এবার আমার কাছে ফেভারিট মনে হয় আর্জেন্টিনা, জার্মানি, স্পেন ও ফ্রান্সকে। আমি মনে করি, এই চারটি দলের সঙ্গে ব্রাজিলও ফাইনালে যাওয়ার যোগ্যতা রাখে। ও আমি ইংল্যান্ডের নামটা ভুলে গেলাম। হ্যাঁ, তাদেরও এবার সম্ভাবনা রয়েছে। সত্যি বলতে, আমি ব্যক্তিগতভাবেও হ্যারি কেইন ও সানচোকে পছন্দ করি। তারা দু'জনই অসাধারণ খেলোয়াড়। আমি এমন খেলোয়াড়দের পছন্দ করি, যাঁদের এমন যোগ্যতা রয়েছে।
প্রশ্ন :বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন কতটা তাড়া করে আপনাকে?
নেইমার :বিশ্বকাপ জেতা আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। যখন থেকে আমি বুঝি ফুটবলটা কী,তখন থেকেই এই স্বপ্ন মনে লালন করছি। এবার আমার সামনে আরেকটি সুযোগ। আমি আশাবাদী, এবার দারুণ কিছু হবে। আসলে সবাই বিশ্বকাপ নিয়ে বড় আশাটাই করে। সবাই চায়, এই সোনালি ট্রফি ছুঁয়ে দেখতে। এ নিয়ে আমি খুব বেশি মাতামাতি করি না। তবে মাঝেমধ্যে মজার ছলে অনেকের সঙ্গে বলি, আমরা এবার ফাইনাল খেলব। একদিন মেসিকে বলেছিলেন, আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো এবং তাদের বিপক্ষেই। সে এটা শুনে হাসতে লাগল। সে এবং কিলিয়ানের সঙ্গে খেলাটা সত্যিই আনন্দের। তারা দু'জন সত্যিকারের তারকা, যেখানে লম্বা সময় ধরে মেসিকে বিশ্বের সেরা ভাবা হয়। কিলিয়ান এখনও তরুণ, সে দিন দিন উন্নতি করছে, নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিচ্ছে এবং এখনও সে উন্নতির পথে। এটা সব সময়ই দারুণ কিছু, তাদের মতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলাটা।
প্রশ্ন :বিশ্বকাপ না জিতলে কি ক্যারিয়ার অপূর্ণ থেকে যাবে?
নেইমার :না, আমার কাছে তেমন মনে হয় না। আমি এখন পর্যন্ত অনেক কিছুই পেয়েছি। যেটা আমি নিজে কখনোই প্রত্যাশা করিনি। তাই আজও যদি ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়, তবু আমার কোনো আফসোস থাকবে না। আমি দিনশেষে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
প্রশ্ন :২০১৪ বিশ্বকাপের কোন দুঃস্মৃতি বেশি কষ্ট দিয়েছে?
নেইমার :ওই বিশ্বকাপটা আমার জন্য স্পেশাল ছিল। একটা কারণ, সেটা ব্রাজিলের মাটিতে হয়। আরেকটা কারণ, আমার দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ছিল। আমি বিশ্বাস করি, এটা (কাতার বিশ্বকাপ) আমার আরও বেশি স্পেশাল।
প্রশ্ন :১০ নম্বর জার্সিটা পরে কি কখনও চাপ অনুভব হয়েছে?
নেইমার :এটা আমাকে অনেক বেশি তৃপ্তি দেয়। আমি মোটেও চাপ অনুভব করি না। আমি খুবই খুশি ব্রাজিলের ১০ নম্বর জার্সিটা পেয়ে। এটা সত্যিই আমার জন্য গর্বের।
প্রশ্ন :কোন বিশ্বকাপের স্মৃতিটা বেশি মনে পড়ছে?
নেইমার :২০০২ বিশ্বকাপটা আমি পরিবারের সঙ্গেই দেখেছিলাম। সেবার ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়। সেটাই ছিল আমার জীবনে প্রথম কোনো বিশ্বকাপ পুরোপুরি দেখা। আর স্মৃতিটা এখনও ঝকঝকে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের ভিডিওগুলো আমি দেখেছি। তবে সে সময়ের কিছু দৃশ্য এখনও আমাকে আনন্দ দেয়। রোমারিও, যাঁকে আমি খুবই পছন্দ করি। আমার আইডল অনেকেই- পেলে, রোনাল্ডো, রোমারিও, কাকা, রোনালদিনহো- তাঁরা সবাই আমার প্রিয় খেলোয়াড়।
প্রশ্ন :জীবনটা একেকজনের কাছে একেক রকম? আপনার কাছে কেমন?
নেইমার :আমি সাধারণ একজন ব্যক্তি। আমি যেহেতু মানুষ, আমার আবেগ-অনুভূতিও থাকবে। মাঝেমধ্যে আমাকে দুঃখ পেতে হয়, আবার মাঝেমধ্যে হাসতে হয়। আসলে আমি নিজেকে নিয়ে গর্বিত। দেখুন, জীবনের নানামুখী অভিজ্ঞতা থেকেই আপনাকে শিক্ষা নিতে হবে। ভুলই আপনাকে নতুন পথ দেখাবে। কেউই জন্মগতভাবে পারফেক্ট না। সবাইকে পদে পদে নানা বাধা পেরিয়েই নিজেকে শোধরাতে হয়।
সূত্র :দ্য টেলিগ্রাফ।
আমাদের কাগজ//টিএ