লাইফ স্টাইল ২১ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৪৪

যেভাবে দূর করবেন মুখের দুর্গন্ধ

ছবি:ইন্টারনেট

ছবি:ইন্টারনেট

আজকের কাগজ ডেস্ক: অনেকেরই দিনে দু'বার ব্রাশ করার পরেও দুর্গন্ধ থেকেই যায়। মুখ ঢেকে কথা বলা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। মুখোমুখি কথা বলতে গেলে বিব্রত হতে হয়, হাসতেও পারেন না প্রাণ খুলে।

অনেকেই মুখে দুর্গন্ধজনিত সমস্যায় ভোগেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে তো বটেই, সারা দিনই মুখে দুর্গন্ধ হয় অনেকের। ফলে পড়তে হয় অস্বস্তিতে। দিনে দু'বার ব্রাশ করার পরেও দুর্গন্ধ যেন থেকেই যায়। মুখ ঢেকে কথা বলা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। মুখোমুখি কথা বলতে গেলে বিব্রত হতে হয়, হাসতেও পারেন না প্রাণ খুলে।

যে মুখে দুর্গন্ধ কারণে হয়

সুগারের মাত্রা বেশি হলে: রাতে রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি হলে শুষ্ক মুখ দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত সুগারের ক্ষেত্রে কিডনি আর কাজ করতে পারে না। তাই অতিরিক্ত সুগার প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়। ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। ডিহাইড্রেশন হলে শুষ্ক মুখ দেখা দিবে। শুষ্ক মুখের কারণে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে মর্নিং ব্রেথ দেখা দিতে পারে।

মুখে লালার পরিমাণ কমে যাওয়া: লালার উৎপাদন এবং প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্ম এবং বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। রাতের বেলায় দীর্ঘ সময় আমরা ঘুমন্ত অবস্থায় মুখ বন্ধ করে থাকি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই লালার প্রবাহ কমে যায় এবং মুখ শুষ্ক হয়ে যায়।

মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে: রাতে মুখ দিয়ে শ্বাস নিলেও মুখ শুষ্ক হয়ে যায়। নাকে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে অথবা মুখ খোলা রেখে ঘুমালে শুষ্ক মুখের সৃষ্টি হয়। ক্রমাগত দুশ্চিন্তা, ক্যানসার চিকিৎসার সময় কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি গ্রহণ করলে শুষ্ক মুখ হতে পারে। আর শুষ্ক মুখ হলেই আপনার মর্নিং ব্রেথ দেখা দিতে পারে। এগুলো ছাড়া ক্রনিক সাইনোসাইটিস, এসিড রিফ্লাক্স বা এসিড উদ্গিরণ, লালাগ্রন্থির রোগ এবং অন্যান্য কিছু রোগের কারণে মর্নিং ব্রেথ হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুধু মর্নিং ব্রেথ নয় বরং সারা দিনই মুখে দুর্গন্ধ হয় অনেকের।

প্রতিকার: দিনে অন্তত দু’বার দাঁত ব্রাশ: খাবারের কণা দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকাটা কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়। এটি প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়। আটকে থাকা খাবারে জন্মানো জীবাণু মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর বা দিনে অন্তত দু'বার দাঁত মাজা এবং ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

জিভ পরিষ্কার করুন: দাঁত মাজলেই মুখের সব জীবাণু চলে যায় না। প্রতিবার দাঁত মাজার সময় জিভও পরিষ্কার করুন। এতে জিভের ওপর জমা খাবারের কণা দূর হবে।

ধূমপান ছাড়ুন: ধূমপানের কারণে মুখের ভেতর শুকিয়ে যায় এবং মুখের মধ্যে জন্মানো জীবাণুর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ধূমপানের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে। তাই মুখের ক্ষত বা ঘা শুকাতে সময় নেয়। সেক্ষেত্রে মুখে মারাত্মক দুর্গন্ধ হয়।

হজমের সমস্যা দূর করুন: হজমের সমস্যার কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। পেট পরিষ্কার না হলে এই সমস্যা বাড়ে। সেক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে হজমের এনজাইম খেতে পারেন। তাতে হজম ক্ষমতা বাড়বে। পেট পরিষ্কার হবে।

লবঙ্গ: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ মুখে গন্ধ তৈরি করা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। মুখে একটি লবঙ্গ নিয়ে চুষতে থাকুন। এটি গন্ধ দূর করতে চমৎকার কাজ করে।

লেবুর রস: মুখে গন্ধের কারণে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠলে নিয়মিত লেবুর রস পান করুন। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লেবুর ভেতরে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান মুখগহ্বরে বাসা বেঁধে থাকা জীবাণুদের মেরে ফেলে। ফলে দ্রুতই দুর্গন্ধ কমে যায়। এক কাপ পানিতে দুই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন অথবা সেই পানি দিয়ে ভালো করে কুলকুচি করে ফেলেও দিতে পারেন।

চুইংগাম বা দারুচিনি: মুখের আর্দ্র ভাব বজায় থাকলে দুর্গন্ধ কম হয়। তাই চিনি ছাড়া ক্যান্ডি বা চুইংগাম মুখে রাখতে পারেন। দারুচিনিও এক্ষেত্রে বেশ উপকারী।

 

আমাদের কাগজ//টিএ