স্বাস্থ্য সেবা ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ০৭:১৫

দিনে গরম রাতে শীত, বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক: হেমন্তের রাজত্বে হিম হাওয়া আর ঘনকুয়াশায় শীতের তীব্রতা ক্রমশই বাড়ছে। হালকা বাতাস ও শীতের কারণে মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাত দিন আগে ১১ মাসের শিশু মো. সুরাইয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করেন তার বাবা-মা। রোববার (২৭ নভেম্বর) সকালে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। আবহাওয়া পরিবর্তন এবং শীতজনিত রোগে আক্রান্ত এই শিশুটিকে সময়মতো হাসপাতালে আনা হয়েছে বলেই সে এখন বিপদমুক্ত বলে জানান চিকিৎসক।

শিশু সুরাইয়া দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপরীগঞ্জ ইউনয়িনের গাজোকাঠি এলাকার বাসিন্দা। শনিবার, ২৬ নভেম্বর পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের বারান্দায় নাতি সুরাইয়াকে কোলে নিয়ে পায়চারি করছেন নানা আব্দুল গাফ্ফার। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে জানালেন, তাদের এলাকায় ঘরে ঘরে শিশু ও বয়স্করা জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যার দ্বিগুণ শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে। শয্যা না পেয়ে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে বারান্দায় অবস্থান করতে দেখা গেছে অনেক অভিভাবককে। ২৫ শয্যার ওয়ার্ডে ভর্তি দেখা গেছে ৫১ শিশু রোগী। হাসপাতালটিতে প্রতিদিন ১৫-২০ জন শিশু শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে বয়স্ক ও শিশু রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে। মূলত আবহাওয়াজনিত কারণে তারা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

সুস্থ থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এ সময়ে শিশুদের ধুলাবালি এড়িয়ে চলা দরকার। সন্ধ্যার পর কারণ ছাড়া বাইরে না থাকা এবং বাসি ও ঠান্ডা খাবার খাওয়া এডিয়ে চলতে হবে। ডায়রিয়া বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলেই রোগীকে দ্রুত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিতে হবে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, রোববার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পঞ্চগড়ে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। নভেম্বরের শুরু থেকে সন্ধ্যার পর ঘনকুয়াশা দেখা দিচ্ছে। রাতে কনকনে শীত অনুভূত হলেও প্রতিদিন সকাল ৮টার মধ্যে সূর্যের তাপ ছড়িয়ে পড়ে। দিনের প্রখর রোদে আবহাওয়া বেশ গরম থাকে। মৌসুমের শুরু থেকে দিনে গরম এবং রাতে শীত অনুভূত হওয়ায় রোগ-বালাই বাড়ছে।

আমাদেরকাগজ/ এএইচ