কৃষি ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৬:২৩

বোরো চাষ নিয়ে শঙ্কা, ধীরে নামছে হাওরাঞ্চলের পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: পানি কমতে শুরু করেছে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে । তবে পানি নামার গতি খুবই ধীর। ধীরগতিতে পানি কমার কারণে বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না কৃষকরা। এতে বোরো আবাদের চাষাবাদ দেরিতে শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে, পানি নামতে দেরি হলেও হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের জন্য পিআইসি গঠন করা হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। হাওরপাড়ের কৃষকরা জানান, হাওরপাড়ের মানুষের একমাত্র ফসল বোরো। এর ওপর কৃষকদের সারা বছরের সংসার খরচ, চিকিৎসা, আচার-অনুষ্ঠান ও সন্তানদের পড়ালেখা নির্ভর করে। কিন্তু এবার পানি নামার ধীরগতির কারণে এখনো বীজতলা তৈরি করা যাচ্ছে না। অন্য বছর নভেম্বরের শেষ দিকে বীজতলা তৈরি করে বপন করা যেতো। ডিসেম্বরের শেষের দিকে জমিতে চারা রোপণ শুরু হয়। কিন্তু এ বছর দেরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, সঠিক সময়ে বীজ বপন ও চারা রোপণ করতে না পারলে আগাম বন্যায় ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে। খালিয়াজুরির বোয়ালি গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, ‘দেরিতে বীজ বপন করলে জমিতে চারা লাগাতেও সময় লাগবে। এ সময় শীত চলে আসবে। ভালো চারা না হলে ভালো ফসলও হয় না। আবার ফসল পাকতে দেরি হওয়ায় আগাম বন্যায় ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে। সবমিলিয়ে এবার চাষাবাদ নিয়ে আমরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’

পুরানহাটি গ্রামের শফিকুল ইসলাম তালুকদার ও স্বাগত সরকার বলেন, ‘হাওড়ে পানি নামতে দেরি হচ্ছে। এ কারণে বোরো ধান রোপণ করতেও দেরি হবে। পরে তা কাটতেও দেরি হবে। এজন্য আগাম বন্যার ঝুঁকিতে থাকবে বছরের একমাত্র বোরো ফসল।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাওরে ৩১০ কিলোমিটার ডুবন্ত (অস্থায়ী) বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে খালিয়াজুরিতে রয়েছে ১৮৫ কিলোমিটার। এসব বাঁধের ওপরও কৃষকদের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল নির্ভর করে। এই ফসলরক্ষা বাঁধগুলো উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করে মেরামত করে জেলা পাউবো। এবার পানি না কমায় বাঁধের জরিপকাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান বলেন, হাওরে এবার পানি ধীরগতিতে নামছে। পানি দ্রুত নেমে যেতে যেসব জলকপাটে পলি জমেছিল তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়ম মেনে এরই মধ্যে ১৬১টি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। এবার বন্যায় বাঁধের ক্ষতি বেশি হওয়ায় আরও ১০-১২টি পিআইসির প্রয়োজন হবে।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা সভা হয়েছে। বীজতলা প্রস্তুতে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আমাদেরকাগজ/ এএইচ