রাজনীতি ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৯:১৫

র‌্যাব থেকে হত্যা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি একই সংগঠনের বহিষ্কৃত এক নেতা। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) তাকে আটক করে র‌্যাব। তবে কিছুক্ষণ পর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে র‌্যাবের হাত থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান অনুসারীরা। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় মুজিব মঞ্চের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের ওই নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ঘটনাস্থলে বগুড়া র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিনও উপস্থিত ছিলেন। 

জানা যায়, ছিনিয়ে নেয়া ওই আসামি হলেন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও সরকারি আজিজুল হক কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ। তিনি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবির হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি। 

প্রকাশ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার খবরে সাতমাথাসহ আশপাশের এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

তবে র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিন খান জানান, ‘আমাদের টার্গেট রউফ না। অন্য একটি মামলায় বাবার নামের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা রউফকে পাশে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে সরিয়ে নিয়ে।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বগুড়া ছাত্রলীগের কার্যালয়ের ভাঙচুর চালানো হয় এমন অভিযোগে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন সংগঠনটির নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা। তাদের মিছিলটি শহরের টেম্পল রোড থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুজিব মঞ্চে এসে শেষ হয়। এরপর বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগ নেতারা। সেখানে নেতাকর্মী নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রউফও উপস্থিত হন। 

এ সময় র‌্যাব কর্মকর্তারা তাকে ঘিরে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে কয়েকজন নেতাকর্মীরা রউফকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে আব্দুর রউফের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার নামে কোনো অভিযোগ আছে বলে জানা নেই। র‌্যাব আমাকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে নিয়ে আসে’।

প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ নেতা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই বিরোধীতা করে জেলা ছাত্রলীগের একটি অংশ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করে আসছে। কমিটিকে কেন্দ্র করে ছাত্রীলগের দুটি পক্ষ প্রকাশ্যে মহড়া দেওয়া শুরু করে। জেলা আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয় এই কমিটিকে কেন্দ্র করে। যদিও নতুন ঘোষিত কমিটিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পূর্ণ সমর্থন দিয়ে আসছে। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ বিদ্রোহীদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছে। এতে ছাত্রলীগের বিরোধ আরও পোক্ত হয়।

সুযোগে ছাত্রলীগের বিদ্রোহীরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও তালা ঝুলিয়ে দেয়। একই জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ও তালাবদ্ধ করেন তারা। এরপর থেকেই নতুন কমিটির নেতারা তালা ভাঙছেন, বিদ্রোহীরা নতুন করে তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছে। এভাবে প্রায় দেড় মাস ধরে চলছে। এর জেরে গতকাল সোমবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এর আগে ছাত্রলীগ কার্যালয়ের দরজা কেটে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

আমাদের কাগজ/এম টি