আমাদের কাগজ ডেস্ক: শীতে আবহাওয়া আর্দ্র থাকে। তাই ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। এই সময় ত্বকে চাই বাড়তি যত্ন। শীতে গোসল করার সিদ্ধান্তটা বিরাট ব্যাপার মনে হয়। শীত আসলেই অনেকেই গোসল করা কমিয়ে দেন, আবার অনেকে প্রতিদিনই করেন। কিন্তু নিয়মিত গোসল করায় ত্বকের জন্য বেশ উপকার হয়।
ত্বকে কালচে ময়লাভাব সৃষ্টি : পর পর কয়েকদিন গোসল না করলে ঘাম আর ধুলো মিশে ত্বকে একটা কালচে ময়লাভাব বা ডিসকালার প্যাচ দেখা যায়, এটা যতই লোশন মাখা হোক না কেন যাবে না। একবার এটা হয়ে গেলে তখন প্রচুর সাবান ঘসাঘসি ছাড়া কোন উপায় থাকে না। এরচেয়ে এটাই ভালো নয় কি যে প্রতিদিন না হোক, অন্তত একদিন পরপর হলেও গোসল করা?
ত্বকের নানাবিধ সমস্যা : প্রতিদিন গোসল না করলে সারদিনের ধুলোবালি, ঘাম, ত্বকের মৃত চামড়া জমে যায় শরীরে। যাদের ব্রণের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই ব্যাপারটা আরও খারাপ হয়ে যায়। ব্রণ ছাড়াও ত্বকের অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। ত্বক অনেক বেশি ড্রাই হয়ে ফেটে যায়। তাই নিয়মিত গোসল করা উচিত।
শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি : হেলথ রিস্কের পাশাপাশি শীতে নিয়মিত গোসল না করায় অন্য সমস্যাও আছে। শীত শীত করে গোসল না করলে আপনার আরও বেশি ঠান্ডা লাগবে, কাজে জড়তা আসবে, ঝিমিয়ে পড়বেন, এনার্জি লেভেল কমে যাবে। সারা দিনের পরে একটু উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল আপনার শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দু’টোই দূর করবে। মন ভালো থাকবে এবং অনেক বেশি সতেজ অনুভব করবেন।
ঘামের দুর্গন্ধ : অনেকে বলবেন শীতে তো আমরা ঘামি না, তাই শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ আসবে কোথা থেকে। বিষয়টা মোটেও এরকম নয়, শীতে আমরা গরমের সিজনের মত ঘামি না ঠিক। কিন্ত আমাদের ত্বক এবং চুলে থাকা ব্যাকটেরিয়া শরীরের প্রোটিন এবং ফ্যাটি অ্যাসিডকে মেটাবলাইজ করে যেটা আমাদের শরীরে একটা বাজে বডি ওডর তৈরি করে, অনেক সময় আমরা যেটা হয়তো নিজেরা বুঝতে পারি না।
গোসলে গরম পানির ব্যবহার : অনেকে গোসলে অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করে থাকে। আসলে নিয়মিত অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করলে ত্বকের কিছুটা ক্ষতি হয়। এজন্য পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় করতে হবে। গরম নয়, স্বাভাবিক। বা কুসুম গরম পানি বলতে আমরা যেটা বুঝি, খুবই হালকা গরম অথবা বেশি ঠান্ডা থেকে স্বাভাবিক করতে হবে। তাহলে ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো। অনেকে অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করে। এটা ঠিক নয়।
সারাদিন ধরে আমরা নানা ধরনের জিনিসের সংস্পর্শে আসি, হাত দিয়ে ধরি আর এসব থেকে জীবাণু আমাদের হাত থেকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও খুব সহজেই চলে যায়। তার ওপর যদি কোথাও কোন কাটা ছেঁড়া থাকে, তাহলে সেখানে জীবাণু রক্তের সাথে মিশে খুব সহজেই আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। সুতরাং, দিন শেষে গোসল না করলে একটা বড় হেলথ রিস্ক থেকেই যায়। ঠান্ডার ভয়ে গোসল না করে শেষে দেখবেন, এমনিতেই জ্বর, সর্দি, কাশি বাধিয়ে ফেলেছেন। কারণ এই সিজনে এইসব অসুখের জীবাণু চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। তাই শীতে প্রতিদিন না হলেও একদিন পর পর গোসল করা উচিত। তাই শীতে নিয়মিত গোসল করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।
আমাদেরকাগজ/এইচএম