ধর্ম ও জীবন ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৩:০০

স্ত্রীর গর্ভকালীন অবস্থায় পুত্র সন্তানের খতনা দেওয়া যাবে কি?

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

ডেস্ক রিপোর্টঃ খতনা সাধারনত মুসলমানি বলে পরিচিত। একটি অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে মানব শিশ্নের অগ্রচর্ম (প্রিপিউস) অপসারণ। যা আমাদের সমাজে প্রচলটি রয়েছে। এ সংস্কৃতি শত শত বছর ধরে পালন করে আসছে। এটিকে মহান সুন্নত বলে । বাঙালি মুসলিমরা সুন্নতে খাতনার পর সাধারণত ভোজের আয়োজন করে। ইন্দোনেশিয়াতেও শিশুর খৎনা করার পর পেরাইয়ান সুনাতান নামে একটি ভোজের আয়োজন করা হয়। যুগে যুগে বড় বড় নবী-রাসুলও এ সুন্নত পালন করেছেন। সর্বপ্রথম এ সুন্নত পালন করেছেন হজরত ইবরাহিম (আ.)।

হজরত সাইদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ.) থেকে বর্ণিত, হজরত ইবরাহিম (আ.) হলেন খতনার সুন্নত পালনকারী সর্বপ্রথম ব্যক্তি। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ২৬৪৬৭)

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম (আ.)-কে তাঁর রব কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করেন, অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করেন। তিনি বলেন, আমি তোমাকে মানুষের জন্য নেতা বানাব। সে বলল, আমার বংশধরদের থেকেও? তিনি বলেন, জালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৪)

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর পর সব নবী-রাসুল খতনা করিয়েছিলেন। জানা যায়, হাদিস শরিফের তথ্য অনুযায়ী, সুন্নত পালনের প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। 

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, ফিতরাত, অর্থাৎ মানুষের জন্মগত স্বভাব পাঁচটি—খতনা করা, নাভির নিম্নদেশে ক্ষুর ব্যবহার করা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নখ কাটা ও গোঁফ খাটো করা। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৮৮৯)

অনেক ক্ষেত্রে কিছু কুসংস্কারও ছড়িয়ে আছে, খতনা নিয়েও এমন একটি ধারণা আছে যে, স্ত্রী গর্ভবতী অবস্থায় অন্য সন্তানের খতনা করানো যাবে না। এতে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করেন অনেকে। কেউ কেউ আবার ধর্মীয় কোনো বিধিনিষেধ আছে কিনা জানাতে চান। এ নিয়ে আলেমরা বলেন,এটি একটি সামাজিক কুসংস্কার। মা গর্ভবতী থাকাকালীন অন্য সন্তানের খতনা করাতে কোনো বাধা নেই। এটি একটি সামাজিক কুসংস্কার। 

আলেমদের মতে, এর বাইরেও সমাজের আরও কিছু কুসংস্কার রয়েছে, যেমন, চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ চলাকালে গর্ভবতী মায়েদের কোনোরূপ কাটাকুটি, ছিদ্র বা কোনো বস্তু ভাঙা মোচড়ানো অনেক সমাজে নিষেধ করা হয়। এতে নাকি গর্ভের শিশুর দেহে এর প্রতিফলন ঘটে। এটিও একটি কুসংস্কার। ইসলামে এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই। 


সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ, উচ্চতর ফতোয়া ও হাদিস গবেষণা বিভাগ মারকাযুদ্দাওয়াহ আল ইসলামিয়া ঢাকা

আমাদের কাগজ/এমটি