জাতীয় ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৩:৪৫

জাপান থেকে ৬৯০ কোটি টাকার এলএনজি কিনছে সরকার

আমাদের কাগজ রিপোর্ট: জাপান থেকে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ব্যয় হবে ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ হাজার ৩১২ টাকা। জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে।

জাপান থেকে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি বলেন, আজকের সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জাপানের জেরা কোম্পানির এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানি করা হবে। জাপানের জেরা কোম্পানি থেকে ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ হাজার ৩১২ টাকা ব্যয়ে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে খরচ হবে ১৬ দশমিক ৫০ ডলার।

গত ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।

২০২১ সালের ২৩ জুন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।

পেট্রোবাংলা খোলাবাজার থেকে সর্বশেষ এলএনজি কিনেছিল গত বছরের মে মাসে। তখন প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়েছিল ২৬ ডলার সেন্ট। এরপর আর এলএমজি আমদানি করা হয়নি।

জানা গেছে, এলএনজি আমদানির জন্য বেশকিছু দেশের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। কিন্তু সরকার খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে এলএনজি আমদানি করতে চায়। এজন্য ২০১৯ সালে খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে এমএসপিএ পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০২১ সালে জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য দুবাইয়ের চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে গত কয়েক বছর বাসাবাড়ির পাশাপাশি শিল্পখাতেও নতুন সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট বিবেচনায় ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল এলএনজি আমদানি শুরু করে সরকার। সামিট এলএনজি যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারেট এনার্জির স্থাপন করা ভাসমান টার্মিনালের (এফএসআরইউ) মাধ্যমে আমদানি করা এলএনজি বর্তমানে সরবরাহ হচ্ছে।

জানা গেছে, দেশে দৈনিক প্রায় ৪০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে কম-বেশি মিলিয়ে ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৪০-৪২ কোটি ঘনফুট এলএনজি থেকে রূপান্তরিত গ্যাস। যেখানে দেশে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি রূপান্তরের সক্ষমতা রয়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে দেশে ২৯ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে।

গত বছরের জুন মাসে কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) ছাড়া সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্য গ্যাসের দাম বাড়িয়েছিল সরকার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শিল্প, বিদ্যুৎ বাণিজ্য গ্রাহকদের জন্য ফের গ্যাসের দাম বাড়ায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

 

 

 

 

আমাদের কাগজ/টিআর