খেলাধুলা ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৪:৫৭

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

নারী ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব

স্পোর্টস ডেস্ক : সাউথ আফ্রিকায় চলতি নারী টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকা বাংলাদেশের এক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ওই ক্রিকেটার তাতে সাড়া দেননি। কোচ ও ম্যানেজারকে অবহিত করেন বিষয়টি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) জানানোর পর তদন্ত শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ বিস্ফোরক খবর। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার লতা মন্ডলকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশেরই আরেক ক্রিকেটার। যিনি এখন জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন। জানা গেছে, তার নাম সোহেলী আক্তার।

বেসরকারি টিভি চ্যানেল যমুনা টিভি এ নিয়ে একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস করেছে। তারাই অন্য একটি রিপোর্টে জানিয়েছে, ফোন করে লতা মন্ডলকে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন দলের বাইরে থাকা সোহেলী আক্তার।

লতাকে কী প্রস্তাব দিয়েছেন সোহেলী আক্তার? ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ড থেকেই জানা যায়, লতা মন্ডলকে প্রস্তাব দেওয়া হয় খারাপ খেলার জন্য লাখ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে তিনি যদি হিট আউট হন তাহলে পাবেন ২০ লাখ টাকা। আর যদি স্টাম্পিং হন তাহলে তাকে দেওয়া হবে ৫ লাখ টাকা।

লতা অবশ্য সোহেলী আক্তারের ফাঁদে পা দেননি। তিনি এই প্রস্তাব শোনার সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে দেন এবং এ ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে। বিসিবিও দ্রুত বিষয়টি জানায় আইসিসির দুর্নীতিদমন শাখাকে।

বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন, আকসুই এখন এ বিষয়ে তদন্ত করবে এবং অভিযুক্ত ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তিনি বলেন, ‘আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটই এই বিষয়টি দেখভাল করছে। আমাদের খেলোয়াড়রা খুবই ওয়াকিবহাল যে তাদের কী করতে হবে আর কী করতে হবে না। যদি ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে কোনো প্রস্তাব আসে তাদের কাছে, তাহলে সে ব্যাপারে তাৎক্ষণিক যে আইসিসি এসিইউকে (আকসু) জানাতে হবে, সে ব্যাপারে তারা জানে। এখন এটা বিসিবির হাতে নয়। বিসিবি তদন্তও করবে না। আমরা যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে সে নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য করবো না। প্রকৃতিগতভাবেই এ বিষয়টা খুবই স্পর্শকাতর।’

সোহেলী আক্তার যমুনা টিভির কাছে স্বীকারও করেছেন ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কথা। ‘আকাশ’ নামের এক জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানান সোহেলী। বলেন, তিনি কেবল মধ্যস্থতা করেছেন। কোনো ভুল করেননি বলেও দাবি তার।

ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, সোহেলী লতাকে বলছেন, ‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি তোমার কোনো ক্ষতি করব না। তোমার যখন ইচ্ছা হবে ফিক্সিং করবে। যখন চাইবে না, করবে না। কোন ম্যাচে ফিক্সিং করবে, সেটা তোমার ব্যাপার। ধরো তুমি একটা ম্যাচে ভালো খেললে। তাহলে পরের ম্যাচে ফিক্সিং করতে পারো। তুমি স্টাম্প-আউট বা হিট উইকেট হতে পারো। যদি ২০-৩০ লক্ষের বিনিময়ে হিট উইকেট হতে অসুবিধা থাকে, তবে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে স্টাম্প-আউট হতে পারো। তোমার যদি এটা কম মনে হয়, তবে বলতে পারো। আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলব। মনে রেখো, এটা কথাটা শুধু তোমার-আমার মধ্যে থাকবে।'

লতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ‘বান্ধবী আমি এগুলোর মধ্যে নাই। তুমি আমাকে এগুলো বইলো না। এগুলো আমাকে দিয়ে কখনও হবে না। আমাকে এসব বইলো না, প্লিজ। প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে (আকসু) জানানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন লতা।

আমাদেরকাগজ/ এইচকে