অর্থ ও বাণিজ্য ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০২:৫১

মাংস খেতে পারছেন না মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বসেছে মাংসের হাট। তবে মাংস কিনতে এখন আর আগের মত ভিড় দেখা যায় না দোকান গুলোতে। যারা সপ্তাহে ৩ দিন মাংস ভাত খেতেন এখন তারা কমিয়ে ১ দিন মাংস ক্রয় করছেন। তাই বাজারে কিংবা কসাইয়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায় আগের মত মাংস কেনেন না মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। 

রাজধানীর বিভিন্ন বড় মাংসের বাজার গুলোতে বাজারের সামনে থাকত ছোট জটলা। যেখানে কিনা প্রতিদিন একই সময় চোখে পড়ত জটলা ও মানুষের ভিড়।

সেখানে এখন ক্রেতা-ই খুঁজে পাচ্ছেন না মাংস বিক্রেতারা। মাংসের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, পর্যাপ্ত মাংস সরবারহ থাকলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না অনেক দোকানে। 

বাড্ডা এলাকার ডিআইটি প্রজেক্ট বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা কবির মিয়া জানান তিনি গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭৫০ টাকা কেজি দরে। কবির মিয়ার ভাষ্য মতে, এরপরও তিনি লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। তিনি বলেন, আগে প্রতি সপ্তাহে দুইটা গরু জবাই করতাম, এখন একটি করছি। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। বাজারে গরুর খাবারের দাম বেশি। সেই সাথে যুক্ত হয় পরিবহন খরচ, এটাও অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি।

ডিআইটি প্রজেক্ট বাজারের মুরগি বিক্রেতা হাফিজ মিয়া জানান তিনি ব্রয়লার মুরগি (খুচরা) কেজিপ্রতি বিক্রি করছেন ২২০ টাকা করে। তবে পাইকারি বিক্রি করছেন ২০০-২১০ টাকা কেজি। দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজারে সবকিছুর দামই বেড়েছে, সে হিসেবে মুরগির দামও বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। মুরগির খাবারের দাম বেশি, পরিবহন খরচ বেশি, সেগুলোর দাম কমলে মুরগির দাম কমে আসবে।

হাফিজ আরও বলেন, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, যা গতমাসেও ছিল ২৬০ টাকা কেজি। হঠাৎ করেই দামটা বেড়ে গেছে। আমাদের তো কিছু করার নাই। দাম বেশি থাকায় অনেকেই দোকানে এসে ফিরে যায়। 

এবিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলছেন,খাবার খরচ কাটছাঁট করছে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। আগে ৪ জনের পরিবারে যে মাসিক খরচ হত তার থেকে দ্বিগুণ কমিয়ে এনেছে বলে ধারণা করছেন তারা। 

মাংস কিনতে আসা স্কুল শিক্ষক ফরহাদ সাহেব জানান, আগে বাচ্চাদের সপ্তাহে ৪ দিন মাংস খাওয়ালেও এখন আর আগের মত মাংস কিনার মত সাহস বা সামর্থ্য নেই বলে জানান তিনি। 

তিনি জানান,বাসায় ফ্রীজে আগে দুই পাঁচ কেজি মাংস থাকলেও এখন আগের মত না পারছি কিনতে না পারছি সপ্তাহে ২ দিন মাংস ভাত খেতে। দাম বাড়ার সাথে সাথে মাংস কেনা বন্ধ হয়ে গেছে আমাদের মত নিন্ম আয়ের মানুষের বলে জানান তিনি। 

রিকশা চালক কালাম বলেন,আগে যাই রোজগার করতাম দিন শেষে এক বার অন্তত মাংসে কামর দিতাম এখন আর আগের মত মাংসের স্বাদ পাই না। খাবারের দোকানে গেলে ভাজি ডাল দিয়ে খেয়ে কোন রকম দিন পাড় করছি বলে জানান তিনি। 

ধানমন্ডি এক রেস্টুরেন্টে গেলে সেখানে থাকা মালিক জানান, আগে আমার হোটেলে রোজ ২০ কেজি মাংস বিক্রি করতাম। দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আগের মত মাংস আনেন না তিনি। 

তিনি জানায়, মধ্যবিত্তরা খুব সম্ভবত এখন আর মাংস খান না। তাই বিক্রি ও মজুদ দুটিই কম বলে জানান তিনি। 

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের শহুরে অনেক শ্রমিক পরিবারের সন্তানদের একটি গোটা প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে রুই, কাতলা, ইলিশের মতো মাছগুলো খেতে কেমন, তা না জেনে। সূত্র (প্রথম আলো অনলাইন)

আমাদের কাগজ/এমটি