সারাদেশ ১২ মার্চ, ২০২৩ ০৪:৪৪

বাসর রাতে স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ নববধূ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামে স্কুলশিক্ষক লিটন আলি (৪৩) প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফুলশয্যার ঘরে প্রবেশ করেন। নববধূকে গহনা পরিয়ে দেওয়ার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। মেহেদিরাঙা হাতে স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ নববধূ ফাতেমা খাতুন।

শুক্রবার, ১০ মার্চ রাতে এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে । শনিবার (১১ মার্চ) মাগরিব নামাজের পর জানাজা শেষে রাতে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মৃত শুকুর আলির ছেলে। তিনি পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার ধোপাবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তার আগের পক্ষের ৯ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। নববধূ ফাতেমা ঝিনাইদহের গান্না ইউনিয়নের কালুহাটি ঘোপপাড়া গ্রামের সোলায়মান হকের মেয়ে।

পরিবার সূত্র জানা যায়, লিটন আলীর প্রথম স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার প্রথম সংসারে লামিয়া খাতুন নামের ৯ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। প্রথম স্ত্রী মৃত্যুর আড়াই মাস পরে শুক্রবার ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেন লিটন আলী। বাসর রাতে প্রথম স্ত্রীর রেখে যাওয়া সোনার বালা দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতে পরানোর সময় হঠাৎ অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লিটন আলী।

চিকিৎসক হাসানুর রহমান বলেন, রাত সাড়ে ৯টার পর পরিবারের সদস্যরা লিটন আলীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাদের বর্ণনা শুনে প্রাথমিকভাবে ব্রেন স্ট্রোক মনে হয়েছিল। ইসিজি রিপোর্টের পর দেখা যায় তিনি হার্ট অ্যাটাক করেছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা কিংবা রাজশাহী নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন চাঁন বলেন, লিটন আমার ভাতিজা। পরিবারটির ওপর দিয়ে একের পর এক ঝড় বয়ে যাচ্ছে। মা-মরা মেয়েটি তার বাবাকে হারিয়ে একেবারে অসহায় হয়ে পড়লো।

তিনি আরও বলেন, একমাত্র মেয়ে লামিয়া খাতুন প্রথমে মাকে ও পরে বাবাকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। পৃথিবীতে আপন বলতে তার আর কেউ রইলো না। শনিবার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

আমাদেরকাগজ/ এইচকে